গাজার পানির লাইনে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৬ শিশুসহ নিহত ১০

- আপডেট সময় ০৫:৫৬:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
- / 3
গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি পানির ট্যাংকার থেকে পানি সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষের ওপর ইসরায়েলের চালানো ড্রোন হামলায় ছয় শিশুসহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। রোববারের এই হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার জরুরি পরিষেবা সংস্থা।
নিহতদের মরদেহ নুসিরাতের আল আওদা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে আরও ১৬ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের মধ্যে সাতজন শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের একজন চিকিৎসক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আল-নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রস্থলে পানি সংগ্রহে আসা সাধারণ মানুষের একটি লাইনের ওপর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে একটি ড্রোন। হামলার সময় সবার হাতে খালি জেরিক্যান ছিল। একটি অনলাইন ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কে ছুটোছুটি, শিশুর কান্না, রক্তাক্ত দেহ এবং লাশ পড়ে আছে রাস্তায়। আহতদের স্থানীয়রা নিজেদের গাড়ি ও গাধার গাড়িতে করে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যান।
গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের বিমান হামলা সম্প্রতি বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই হামলা চালানো হয়েছে। একই দিনে গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, গাজার সিটি ও মধ্য গাজায় তিনটি আবাসিক ভবনে চালানো পৃথক হামলায় আরও ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল গত বছর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সীমান্তে চালানো হামলার জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৮৮২ জন মানুষ, এমন তথ্য দিয়েছে হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
চলমান সংঘাতে গাজার অধিকাংশ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ৯০ শতাংশেরও বেশি বাড়িঘর আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের চরম সংকট চলছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে ১৩০ দিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো গাজায় ৭৫ হাজার লিটার জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এই পরিমাণ জ্বালানি সেখানে থাকা বিপুল জনগোষ্ঠীর ন্যূনতম চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়।
শনিবার জাতিসংঘের অধীনে থাকা ৯টি সংস্থা সতর্ক করে জানায়, গাজায় জ্বালানি সংকট ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে হাসপাতাল, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও বেকারির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই অনেক হাসপাতাল অন্ধকারে ডুবে গেছে। নবজাতক, প্রসূতি ও আইসিইউ রোগীরা চরম বিপদে আছেন। অ্যাম্বুল্যান্স চলাচলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি