ঢাকা ০৬:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় মার্কিন শেয়ারবাজারে বড় পতন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (স্থানীয় সময়) দুপুরে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ একগুচ্ছ চিঠি প্রকাশ করে তিনি জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে একাধিক দেশের ওপর নতুন আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে।

এই ঘোষণার পরপরই নিউইয়র্ক শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন দেখা দেয়। ডাও জোন্স সূচক ৪২২ পয়েন্ট কমে যায়। নাসডাক ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক যথাক্রমে ০.৯২ ও ০.৭৯ শতাংশ কমে যায়। যদিও এশিয়ার বাজারগুলোতে মঙ্গলবার সকালে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে অস্থিরতার মূল কারণ কেবল শুল্ক নয় এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অনিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ঝুঁকি। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণা ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।

এই ঘোষণার পরপরই টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, এলজি, এসকে টেলিকমসহ বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর দ্রুত পড়ে যায়। কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ৭ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালিত শেয়ারভিত্তিক তহবিলও ২ থেকে ৪ শতাংশ কমে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কৌশলবিদ রস মেফিল্ড সিএনএনকে বলেন, ‘শুল্কের হার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হওয়ায় বাজারে ব্যাপক বিক্রি শুরু হয়েছে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডের দাম কমে গেছে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৩৯ শতাংশ এবং ৩০ বছর মেয়াদির ক্ষেত্রে তা ৪.৯২ শতাংশে পৌঁছেছে। বিপরীতে, ডলার সূচক ০.৩ শতাংশ বেড়েছে, ফলে ইয়েন, ওয়ান ও র‍্যান্ডসহ বেশ কিছু মুদ্রা দুর্বল হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের ঘোষণাগুলো অন্যান্য দেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে আসতে চাপ দিতেই করা হয়েছে। জেফরিসের ইউরোপীয় প্রধান কৌশলবিদ মোহিত কুমার মনে করেন, ৯ জুলাইয়ের চুক্তির সময়সীমা স্বল্পমেয়াদে অনিশ্চয়তা তৈরি করলেও এটি দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। বরং শেয়ারদর কমে যাওয়াকে বিনিয়োগের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একাধিক বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসবে। তবে তা না হলে আগস্ট থেকেই কার্যকর হবে নতুন শুল্ক হার।

ওয়াল স্ট্রিটে একদিকে যেমন আশাবাদী মনোভাব দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে অনেকে সতর্কও হচ্ছেন। স্কট রেন মনে করেন, অতিমূল্যায়নের কারণে বাজারে একটি ‘আত্মতুষ্টিমূলক আশাবাদ’ কাজ করছে। বিশেষ করে ছোট কোম্পানির শেয়ার ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০–এর ভোক্তা খাতগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় মার্কিন শেয়ারবাজারে বড় পতন

আপডেট সময় ১২:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (স্থানীয় সময়) দুপুরে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ একগুচ্ছ চিঠি প্রকাশ করে তিনি জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে একাধিক দেশের ওপর নতুন আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে।

এই ঘোষণার পরপরই নিউইয়র্ক শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন দেখা দেয়। ডাও জোন্স সূচক ৪২২ পয়েন্ট কমে যায়। নাসডাক ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক যথাক্রমে ০.৯২ ও ০.৭৯ শতাংশ কমে যায়। যদিও এশিয়ার বাজারগুলোতে মঙ্গলবার সকালে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে অস্থিরতার মূল কারণ কেবল শুল্ক নয় এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অনিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ঝুঁকি। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণা ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।

এই ঘোষণার পরপরই টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, এলজি, এসকে টেলিকমসহ বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর দ্রুত পড়ে যায়। কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ৭ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালিত শেয়ারভিত্তিক তহবিলও ২ থেকে ৪ শতাংশ কমে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কৌশলবিদ রস মেফিল্ড সিএনএনকে বলেন, ‘শুল্কের হার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হওয়ায় বাজারে ব্যাপক বিক্রি শুরু হয়েছে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডের দাম কমে গেছে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৩৯ শতাংশ এবং ৩০ বছর মেয়াদির ক্ষেত্রে তা ৪.৯২ শতাংশে পৌঁছেছে। বিপরীতে, ডলার সূচক ০.৩ শতাংশ বেড়েছে, ফলে ইয়েন, ওয়ান ও র‍্যান্ডসহ বেশ কিছু মুদ্রা দুর্বল হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের ঘোষণাগুলো অন্যান্য দেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে আসতে চাপ দিতেই করা হয়েছে। জেফরিসের ইউরোপীয় প্রধান কৌশলবিদ মোহিত কুমার মনে করেন, ৯ জুলাইয়ের চুক্তির সময়সীমা স্বল্পমেয়াদে অনিশ্চয়তা তৈরি করলেও এটি দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। বরং শেয়ারদর কমে যাওয়াকে বিনিয়োগের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একাধিক বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসবে। তবে তা না হলে আগস্ট থেকেই কার্যকর হবে নতুন শুল্ক হার।

ওয়াল স্ট্রিটে একদিকে যেমন আশাবাদী মনোভাব দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে অনেকে সতর্কও হচ্ছেন। স্কট রেন মনে করেন, অতিমূল্যায়নের কারণে বাজারে একটি ‘আত্মতুষ্টিমূলক আশাবাদ’ কাজ করছে। বিশেষ করে ছোট কোম্পানির শেয়ার ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০–এর ভোক্তা খাতগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।