কেনিয়ায় আন্দোলনের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ১১, আহত বহু

- আপডেট সময় ১১:৫০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
- / 4
কেনিয়ায় ‘সাবা সাবা’ আন্দোলনের ৩৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার রাজধানী নাইরোবিসহ দেশজুড়ে এই বিক্ষোভের সময় আরও অন্তত ৫২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কেনিয়া পুলিশ।
১৯৯০ সালের ৭ জুলাই তৎকালীন স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল আরাপ মোইয়ের শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থীদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটি ‘সাবা সাবা’ নামে পরিচিত। কেনিয়ার স্থানীয় ভাষায় ‘সাবা সাবা’ অর্থ ‘সাত সাত’— অর্থাৎ জুলাই মাসের সাত তারিখ। প্রতিবছর এই দিনটিকে কেন্দ্র করে নানা কর্মসূচি পালিত হলেও এবার পরিস্থিতি ছিল অনেক বেশি উত্তপ্ত। বিক্ষোভকারীরা বর্তমান প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগ দাবি করে রাস্তায় নামে।
আল জাজিরার নাইরোবি প্রতিনিধি ম্যালকম ওয়েব জানান, বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রে পৌঁছাতে চাইলে পুলিশ অধিকাংশ প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেয়। এ সময় বাধা অতিক্রম করে কেন্দ্রীয় এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। তিনি আরও জানান, শুধু রাজধানী নয়, কেনিয়ার অন্যান্য অঞ্চলেও একই ধরনের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থান থেকে গুলিবিদ্ধ মানুষের খবর পাওয়া গেছে।
এই বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, পুলিশি নির্যাতন, সরকারের সমালোচকদের গুম এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রতিবাদ। দেশটির সাধারণ জনগণ সরকারের দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে এই আন্দোলনে অংশ নেয়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এটা নিছক প্রতিবাদ নয়— এটি হচ্ছে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় একটি জাগরণ। কেনিয়ার মানবাধিকার কমিশনের মতে, এর আগেও গত মাসে একই দাবিতে আন্দোলনে নেমে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৯ জন।
সরকারি পক্ষ থেকে এখনও হতাহতের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাওয়া এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিই এই বিক্ষোভের পেছনে প্রধান কারণ।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী একজন নাগরিক বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের অধিকার আদায় করতে চাইছিলাম, কিন্তু পুলিশ গুলি চালিয়ে আমাদের থামাতে চেয়েছে।”
সাবা সাবা আন্দোলনের এই রক্তাক্ত বার্ষিকী কেনিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতার ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা। দেশে চলমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট এবং সরকারের কঠোর অবস্থান আগামী দিনে আরও বড় ধরনের গণআন্দোলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।