০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

আজ শেষ আফগানদের জন্য ইরান ছাড়ার সময়সীমা, গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / 123

ছবি সংগৃহীত

 

ইরানে বসবাসরত লাখো আফগান শরণার্থী ও অভিবাসীকে শেষবারের মতো দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইরান সরকার। স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হয়েছে রবিবার। আজ সোমবার থেকে যারা ‘অবৈধভাবে’ অবস্থান করছে, তাদের গ্রেপ্তার করে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। খবর আল জাজিরার।

ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সামরিক সংঘাতের পর ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। ওই সংঘাতের সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রও, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

বিজ্ঞাপন

গত মার্চে ইরান সরকার একটি আদেশ জারি করে, যেখানে বৈধতা ছাড়া অবস্থানকারী আফগানদের ৬ জুলাইয়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আজ থেকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, ২০২৩ সাল থেকেই ইরান অবৈধ বিদেশিদের বহিষ্কারে পদক্ষেপ নিচ্ছিল। মার্চে নতুন সময়সীমা ঘোষণার পর থেকে প্রায় সাত লাখ আফগান ইরান ছেড়েছে, যার মধ্যে জুন মাসেই ফিরেছে দুই লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।

ইরানে আনুমানিক ৪০ লাখ আফগান শরণার্থী ও অভিবাসী রয়েছেন। এদের অনেকে সেখানেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বহু মানুষ যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও তালেবান শাসন থেকে বাঁচতে ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তেহরানে বসবাসকারী আফগান রেস্তোরাঁ মালিক বতৌল আকবরি বলেন, ‘‘এখন ইরানে অ্যান্টি-আফগান মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের খুব কষ্ট দিচ্ছে। আমাদের অনেকের কাছে এটাই একমাত্র পরিচিত ঘর।’’

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে আগে এই সংখ্যা ছিল দিনে মাত্র দুই হাজার।

ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, ‘‘আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে থাকা বিদেশিদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।’’

আল জাজিরার তেহরান প্রতিনিধি রেসুল সেরদার জানান, ইরানের অর্থনৈতিক মন্দা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সামাজিক সমস্যার জন্য আফগানদের দায়ী করা হচ্ছে। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা ও রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমে এই অভিযোগ আরও উসকে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে আফগানদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এত বিপুল সংখ্যক আফগানকে হঠাৎ ফেরত পাঠালে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা আরও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আজ শেষ আফগানদের জন্য ইরান ছাড়ার সময়সীমা, গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি

আপডেট সময় ১০:৫৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

 

ইরানে বসবাসরত লাখো আফগান শরণার্থী ও অভিবাসীকে শেষবারের মতো দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইরান সরকার। স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হয়েছে রবিবার। আজ সোমবার থেকে যারা ‘অবৈধভাবে’ অবস্থান করছে, তাদের গ্রেপ্তার করে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। খবর আল জাজিরার।

ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সামরিক সংঘাতের পর ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। ওই সংঘাতের সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রও, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

বিজ্ঞাপন

গত মার্চে ইরান সরকার একটি আদেশ জারি করে, যেখানে বৈধতা ছাড়া অবস্থানকারী আফগানদের ৬ জুলাইয়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আজ থেকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, ২০২৩ সাল থেকেই ইরান অবৈধ বিদেশিদের বহিষ্কারে পদক্ষেপ নিচ্ছিল। মার্চে নতুন সময়সীমা ঘোষণার পর থেকে প্রায় সাত লাখ আফগান ইরান ছেড়েছে, যার মধ্যে জুন মাসেই ফিরেছে দুই লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।

ইরানে আনুমানিক ৪০ লাখ আফগান শরণার্থী ও অভিবাসী রয়েছেন। এদের অনেকে সেখানেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বহু মানুষ যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও তালেবান শাসন থেকে বাঁচতে ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

তেহরানে বসবাসকারী আফগান রেস্তোরাঁ মালিক বতৌল আকবরি বলেন, ‘‘এখন ইরানে অ্যান্টি-আফগান মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের খুব কষ্ট দিচ্ছে। আমাদের অনেকের কাছে এটাই একমাত্র পরিচিত ঘর।’’

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে আগে এই সংখ্যা ছিল দিনে মাত্র দুই হাজার।

ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, ‘‘আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে থাকা বিদেশিদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।’’

আল জাজিরার তেহরান প্রতিনিধি রেসুল সেরদার জানান, ইরানের অর্থনৈতিক মন্দা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সামাজিক সমস্যার জন্য আফগানদের দায়ী করা হচ্ছে। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা ও রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমে এই অভিযোগ আরও উসকে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে আফগানদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এত বিপুল সংখ্যক আফগানকে হঠাৎ ফেরত পাঠালে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা আরও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।