ভারতের মণিপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে কুকি জনগোষ্ঠীর ৪ জন নিহত

- আপডেট সময় ০৫:৫৬:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
- / 0
মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায় কুকি অধ্যুষিত এলাকায় ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কেঁপে উঠেছে জনপদ। গতকাল সোমবার সেখানে কুকি ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)-এর উপপ্রধান থেনখোথাং হাওকিপসহ চারজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, একটি হুন্দাই গাড়ির ভেতর তিনজনের গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কাছাকাছি এলাকায় ৭২ বছরের এক নারীর মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়।
মণিপুর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে হাওকিপ ছাড়াও কেএনএর দুই সদস্য সেইখোগিন (৩৫) ও লেঙ্গোহাও (৩৫) রয়েছেন। নিহত নারী ফলহিং (৭২), স্থানীয় কোয়েট গ্রামের বাসিন্দা। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ঘটনার সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং হঠাৎ গুলিতে প্রাণ হারান।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে হাওকিপ ও তাঁর দুই সঙ্গী মাতেজাং থেকে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। পথে মংজ্যাং গ্রামে দুর্বৃত্তরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
থেনখোথাং হাওকিপ ছিলেন কেএনএর উপপ্রধান, যার নেতৃত্বাধীন কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (কেএনও) ২০০৭-০৮ সালে ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়। তবে কেএনও-র প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেড কুকি ন্যাশনাল আর্মি (ইউ-কেএনএ) এই চুক্তি মেনে নেয়নি। ইউ-কেএনএর অভিযোগ, কেএনও সরকারি সহযোগিতায় তাদের উপর বারবার হামলা চালিয়ে আসছে। তাদের দাবি, হাওকিপ ও তাঁর অনুসারীরা ইউ-কেএনএর অন্তত ৩০ জন সদস্যকে হত্যা করেছেন, যার মধ্যে শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন।
ইউ-কেএনএ এক বিবৃতিতে স্বীকার করেছে, প্রতিশোধ হিসেবেই হাওকিপসহ কেএনএর তিন সদস্যকে তারা হত্যা করেছে।
দুই বছর ধরে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা চলছে। বিশেষ করে চূড়াচাঁদপুরে সহিংসতার মাত্রা অনেক বেশি। এ পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ২৫০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য, দুই বিদ্রোহী কুকি গোষ্ঠীর নতুন করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। চূড়াচাঁদপুরের মতো স্পর্শকাতর জেলায় সহিংসতা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পুরো ঘটনার তদন্ত চালানো হচ্ছে।