কেনিয়ায় সরকারবিরোধীতায় বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৮

- আপডেট সময় ০২:০৮:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
- / 10
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর সরকারের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজধানী নাইরোবিসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন নিহত এবং প্রায় ৪০০ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়, যখন হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসেন।
২০২৪ সালে ঘটে যাওয়া প্রাণঘাতী বিক্ষোভের এক বছর পূর্ণ হওয়ার দিনে এই প্রতিবাদের ঢেউ ফের জেগে ওঠে। রাজধানী নাইরোবি, কিসুমু, এলডোরেটসহ অন্যান্য শহরে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারীরা ‘রুটো পদত্যাগ করো’ স্লোগান দিতে থাকেন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতীক হিসেবে গাছের ডাল উঁচিয়ে ধরেন।
প্রথমে সরকার এই বিক্ষোভের সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করলেও, নাইরোবির হাইকোর্ট তা বাতিল করে দেয়। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট রুটোর সরকারি বাসভবনের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ বাধা দেয়। প্রেসিডেন্ট রুটো কিলিফি অঞ্চলের এক দাফন অনুষ্ঠানে বলেন, “আমাদের আরেকটি দেশ নেই যেখানে পালিয়ে যাওয়া যাবে। আমাদের দায়িত্ব হলো দেশের শান্তি রক্ষা করা।”
এদিকে, তার অনুপস্থিতিতে যুবকদের একটি দল স্টেট হাউজে ঢোকার হুমকি দেয়, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া প্রস্তুতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পার্লামেন্ট ভবন ও প্রেসিডেন্টের বাসভবনের চারপাশে কাঁটাতারের ব্যারিকেড বসানো হয়।
কেনিয়া মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, ল’ সোসাইটি অব কেনিয়া এবং পুলিশ রিফর্মস ওয়ার্কিং গ্রুপের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অন্তত ৮ জন নিহত এবং ৮৩ জনকে গুরুতর চিকিৎসা দিতে হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৮ জন, আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৩ পুলিশ সদস্যও। তবে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি কেনিয়া জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ১৬।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আমিনা মুডে বলেন, “আমি আমার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য রাস্তায় নেমেছি। এই সরকার আমাদের চাহিদা শুনছে না।” নাইরোবির রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা টিয়ার গ্যাস, কাশতে থাকা মানুষ, ফাঁকা দোকান এবং শোকপত্রে মোড়ানো ফুল সব মিলিয়ে শহর যেন এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সূত্র: বিবিসি