ঢাকা ০৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ব্রিটেন পরিকল্পিতভাবে সামুদ্রিক দুর্ঘটনা ঘটাতে চায়: দাবি রুশ গোয়েন্দা সংস্থার জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করলেন প্রধান উপদেষ্টা, শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে তিনদিনব্যাপী আয়োজন ছাত্রশিবিরের খাগড়াছড়িতে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১ ৫ আগস্ট ইতিহাস কথা বলে জুলাই শহীদদের আত্মত্যাগই হবে আগামীর বাংলাদেশ রুপরেখা : ড. ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ অনুষ্ঠানে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণ কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট খুলবে মঙ্গলবার, বন্দর কর্তৃপক্ষের সতর্কবার্তা ৩৬ জুলাই স্মরণে টেলিটকের বিশেষ অফার সাজিদ হত্যার ইস্যুতে পরিবারের মামলা

গা/জা/য় ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত ২১, আহত শতাধিক

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • / 9

ছবি সংগৃহীত

 

গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গুলি ও ট্যাংকের শেল বর্ষণে ২১ জন নিহত হন এবং আহত হন অন্তত ১৫০ জন। এই ঘটনায় হতাহতদের অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুধার্ত ও দুর্বল সাধারণ মানুষ, যারা সামান্য কিছু সাহায্যের আশায় জড়ো হয়েছিলেন।

বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, হামলাটি গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে ঘটে। তিনি বলেন, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ত্রাণ প্রত্যাশীদের লক্ষ্য করে সরাসরি হামলা চালিয়েছে।” ঘটনার পরপরই এএফপি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ইসরায়েলের প্রায় দুই বছর ধরে চলমান নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু ও নারী। অনেক পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র—কোনো কিছুই রেহাই পায়নি।

হামলার শুরু থেকেই গাজায় খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করেছে ইসরায়েল। পরিকল্পিতভাবে মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে কৃষিজমি, এবং সৃষ্ট হয়েছে চরম দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ইসরায়েল গাজায় অনাহারকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে ত্রাণের আশায় জড়ো হওয়া মানুষদের লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা চালানো হয়।

চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে আবারও ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মে মাসের শেষদিকে সামান্য কিছু ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও তা জাতিসংঘ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে গঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) মাধ্যমে বিতরণ শুরু হয়।

কিন্তু এসব জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্রই এখন পরিণত হয়েছে মৃত্যু ফাঁদে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় প্রতিদিনই এসব কেন্দ্রে হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মে মাসের শেষদিক থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন চার শতাধিক ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন।

এমন বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও, এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

সূত্র: আলজাজিরা

নিউজটি শেয়ার করুন

গা/জা/য় ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত ২১, আহত শতাধিক

আপডেট সময় ০৩:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

 

গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গুলি ও ট্যাংকের শেল বর্ষণে ২১ জন নিহত হন এবং আহত হন অন্তত ১৫০ জন। এই ঘটনায় হতাহতদের অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুধার্ত ও দুর্বল সাধারণ মানুষ, যারা সামান্য কিছু সাহায্যের আশায় জড়ো হয়েছিলেন।

বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, হামলাটি গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে ঘটে। তিনি বলেন, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ত্রাণ প্রত্যাশীদের লক্ষ্য করে সরাসরি হামলা চালিয়েছে।” ঘটনার পরপরই এএফপি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ইসরায়েলের প্রায় দুই বছর ধরে চলমান নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু ও নারী। অনেক পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র—কোনো কিছুই রেহাই পায়নি।

হামলার শুরু থেকেই গাজায় খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করেছে ইসরায়েল। পরিকল্পিতভাবে মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে, ধ্বংস করা হয়েছে কৃষিজমি, এবং সৃষ্ট হয়েছে চরম দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ইসরায়েল গাজায় অনাহারকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে ত্রাণের আশায় জড়ো হওয়া মানুষদের লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা চালানো হয়।

চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে আবারও ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মে মাসের শেষদিকে সামান্য কিছু ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও তা জাতিসংঘ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে গঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) মাধ্যমে বিতরণ শুরু হয়।

কিন্তু এসব জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্রই এখন পরিণত হয়েছে মৃত্যু ফাঁদে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় প্রতিদিনই এসব কেন্দ্রে হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মে মাসের শেষদিক থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন চার শতাধিক ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন।

এমন বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও, এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

সূত্র: আলজাজিরা