সবার নজর ইরানে, গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১৪০: ত্রাণের অপেক্ষায় ঝরলো প্রাণ

- আপডেট সময় ১২:১৯:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
- / 5
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত যখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনাম দখল করে আছে, তখন গাজা উপত্যকায় মানবতাবাদী সংকট আরও গভীর হচ্ছে। চলমান ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় *কমপক্ষে ১৪০ জন নিহত হয়েছেন*, যা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বুধবার (১৯ জুন) বিমান হামলা ও গুলিতে অন্তত ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর হামলা চালানোর মতো মর্মান্তিক ঘটনাও দিনের বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে।
গাজার মধ্যাঞ্চলে সালাউদ্দিন সড়কে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ট্রাকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন অসংখ্য মানুষ। সেখানেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে *কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন*। এই ঘটনায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে যে, এলাকাটি সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বারবার চিহ্নিত করে সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। তারা আরও জানায়, সৈন্যদের দিকে লোকজন অগ্রসর হওয়ায় তারা ‘সতর্কতামূলক’ গুলি ছুড়েছিল, তবে এতে হতাহতের বিষয়টি তাদের জানা নেই।
এছাড়া, বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, মাঘাজি শরণার্থীশিবির, জেইতুন এবং গাজা শহরের কিছু ঘনবসতিপূর্ণ বাড়িঘর লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় *কমপক্ষে ২১ জন মারা গেছেন*। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের একটি শিবিরেও বোমাবর্ষণে ৫ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ সরবরাহ আংশিকভাবে শুরু হলেও, খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে *৩৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং তিন হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন*। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “যারা বোমায় মারা যায়নি, তারা মারা যাচ্ছে ক্ষুধায়। যে বস্তা আটার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে, সেখানেই গড়িয়ে পড়ছে তাদের রক্ত।”
আদেল নামে এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, “মানুষ প্রতিদিন খাবারের খোঁজে বের হচ্ছে, জানে না আর ফিরতে পারবে কি না।”
বর্তমানে ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে অধিকাংশ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। মার্কিন কোম্পানিগুলোর সহায়তায় পরিচালিত এসব কেন্দ্র ইসরায়েলি সেনাদের কড়া নজরদারিতে রয়েছে। তেল আবিবের দাবি, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা নিশ্চিত করছে যেন ত্রাণ হামাসের হাতে না যায়। অন্যদিকে, হামাস বলছে, তারা ত্রাণ চুরি করছে না, বরং ইসরায়েলই সাধারণ মানুষের ক্ষুধাকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে গাজায় বর্তমান ত্রাণব্যবস্থাকে *’অপমানজনক’ আখ্যা দিয়ে এর কড়া সমালোচনা করেছেন।*
গাজার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পেছনে তাদের করুণ বাস্তবতা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এই মানবিক সংকট আন্তর্জাতিক মনোযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
@riyad Sir sir plz check