ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রভাবে বিশ্ববাজারে বাড়ছে জ্বালানি তেলের আমদানি খরচ বাড়ছে
- আপডেট সময় ১২:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / 115
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে বিশ্ববাজারে আবারও বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। পরিস্থিতি স্থায়ী হলে এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ইরানের হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে জাহাজে তেল পরিবহনে বড় সংকট দেখা দিতে পারে, যার ফলে আমদানি খরচ বাড়বে এবং দেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রয়োজন হতে পারে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জানিয়েছে, বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ পরিশোধিত ও ৩০ শতাংশ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল হরমুজ প্রণালি হয়ে পরিবাহিত হয়। তাই সম্ভাব্য সংকট মোকাবেলায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিপিসি। ইতোমধ্যে জাহাজে পরিবহন খরচ বেড়েছে, যদিও বিকল্প পথে তেল আনতে পারলেও তা আরও ব্যয়বহুল হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৬০–৬৫ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানি করে, যার মধ্যে ৪৬ লাখ টন ডিজেল। দেশীয় একমাত্র শোধনাগার থেকে মাত্র ৬ লাখ টন ডিজেল পাওয়া যায়। অপরিশোধিত তেল মূলত সৌদি আরব ও আরব আমিরাত থেকে আসে, এবং তা হরমুজ প্রণালির ওপর নির্ভরশীল। যুদ্ধ চললে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো বিকল্প উৎস বিবেচনা করছে সরকার।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এখনই তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং দীর্ঘস্থায়ী হলে তার পরিণতি বিবেচনায় নেওয়া হবে।
বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান জানান, যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা বাড়লেও এখনই বড় প্রভাব পড়েনি। তেলের সরবরাহ ও মজুত নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে পরিস্থিতি অবনতি হলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিগত কয়েক বছরের তেলের দামের ইতিহাসও পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝায়। ২০২০ সালে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের গড় দাম ছিল ৪২ ডলার, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ২০২২ সালে বেড়ে ১৩৯ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। বর্তমানে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৭৫ ডলারে পৌঁছেছে। হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে তা ১২০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো।
বাংলাদেশে এখন প্রতি লিটার ডিজেল ১০২ টাকা, পেট্রল ১১৮ ও অকটেন ১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রতি মাসে নতুন দাম নির্ধারণ করা হলেও, সরকার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক বাজারের চাপ পুরোপুরি ভোক্তাদের ওপর না চাপাতে।


















