ইসরায়েলি হামলায় ইরানের প্রতিরোধ : এখন পর্যন্ত যে সমস্ত তথ্য জানা গেছে –

- আপডেট সময় ১২:২৫:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
- / 8
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সরাসরি সংঘাতে। শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস III’ নামে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।
ইসরায়েল প্রথমে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, শহর, বিমান প্রতিরক্ষা, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে বহুমাত্রিক হামলা শুরু করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানি সামরিক বাহিনী ‘শতাধিক’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করে বলে দাবি করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
হামলা শুরুর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা, প্রেসিডেন্ট এবং ইসলামি বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি)-এর নতুন প্রধান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ইসরায়েলের এই অতর্কিত আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
আইআরজিসির প্রধান মোহাম্মদ পাকপুর বলেন, “এই শিশুহত্যাকারী শাসনের জন্য খুব শিগগিরই নরকের দ্বার খুলে যাবে। জায়নবাদী শাসন ধ্বংস ও তিক্ত পরিণতির মুখোমুখি হবে।”
প্রচারণায় প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানের ছোঁড়া কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ভেদ করে গেছে।
ইসরায়েলের হামলা এখনও থেমে নেই। শুক্রবার রাতভর এবং শনিবার সকালেও ইসরায়েল তেহরান, তাবরিজ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনী ইতোমধ্যে দুটি ডেস্ট্রয়ার জাহাজ পাঠিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টে ইরানকে তার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগের আহ্বান জানানোর পরই এই মোতায়েন হয়।
রাশিয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও চলমান। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার রাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য রাশিয়ার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন।
এই সংঘাতের প্রভাবে বিশ্ববাজারেও ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার সকালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ দ্বিগুণের মতো বেড়ে যায়। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করবে এবং পশ্চিমা অর্থনীতিগুলোকে চাপে ফেলতে পারে।
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে নজর রয়েছে ইরান-ইসরায়েল উত্তপ্ত পরিস্থিতির দিকে। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।