দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বন্যা ও তুষারঝড়ে ৪৯ জনের প্রাণহানি

- আপডেট সময় ০২:২৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 10
দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে টানা বৃষ্টি ও তুষারপাতের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে একাধিক স্কুলশিক্ষার্থী। পরিস্থিতি এতটাই সংকটজনক যে, প্রতি ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী অস্কার মাবুইয়ানে।
গত মঙ্গলবার সকালে ইস্টার্ন কেপের মথাথা শহরে একটি সেতু পার হওয়ার সময় যাত্রীবাহী একটি বাস প্রবল স্রোতে ভেসে যায়। দুর্ঘটনায় বাসের চালক, কন্ডাক্টর এবং চার শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে আরও চার শিশু।
স্থানীয় টিভি চ্যানেল নিউজরুম আফ্রিকার বরাতে জানা গেছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বাসচালকও রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসএবিসি জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে তিন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, বাসটিতে মোট ১৩ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১১ জনই ছিল স্কুলশিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। তিনি বলেন, “যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের হৃদয়ের গভীর সমবেদনা। এই কঠিন সময় সবার উচিত সতর্ক থাকা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা।”
বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মাবুইয়ানে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং মথাথা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ডেকোলিগনি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, “উদ্ধার কাজে সহায়তা এবং প্রতিবেশীদের সতর্ক করার জন্য স্থানীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
সরকারি তথ্যমতে, ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের ওআর টাম্বো, আমাথোলি এবং অ্যালফ্রেড নজো জেলার মোট ৫৮টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, পাশের প্রদেশ কওয়াজুলু-নাটালেও ৬৮টি স্কুলে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেলেও প্রাণহানির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রবল তুষারপাত, টানা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ইস্টার্ন কেপ এবং কওয়াজুলু-নাটালের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ লাখেরও বেশি বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা এসকম জানিয়েছে, দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারে কাজ চলছে।
এছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে দুই প্রদেশের একাধিক প্রধান সড়ক সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন করে মানবিক সংকট তৈরি করেছে, বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দুর্বল অবকাঠামোর ওপর এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।