নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ায় ইরাক দূতাবাসের কর্মী সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

- আপডেট সময় ১১:০২:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 8
নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে ‘অপরিহার্য নয়’ এমন কর্মী এবং তাঁদের স্বজনদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি গতকাল বুধবার মার্কিন সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট কারণ জানানো না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ও মার্কিন ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, “প্রতিটি দূতাবাসের কর্মীসংখ্যা ও কার্যক্রম আমরা নিয়মিত পর্যালোচনা করি। সাম্প্রতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইরাকে আমাদের কূটনৈতিক উপস্থিতি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
একই দিনে এক পডকাস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন, “ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে।” তিনি ইঙ্গিত দেন যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে তাঁর ধারণা।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথও কংগ্রেসে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, তিনি এমন অনেক ইঙ্গিত পেয়েছেন, যা ইরানের পরমাণু উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি করেছে। এর জের ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের পরিবারকে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
তবে ইরান তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য, এবং তারা কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান যেন এই কার্যক্রম বন্ধ করে এবং বিনিময়ে ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলার আদেশ দেয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
এদিকে উত্তেজনার জেরে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভির মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস জানিয়েছে, সামরিক সংঘাত বাড়তে থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের খবরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম একদিনেই চার শতাংশের বেশি বেড়ে যায়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২,৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।