২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজন: যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

- আপডেট সময় ০৬:৫১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
- / 5
কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে যৌথভাবে ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটির সাম্প্রতিক অভিবাসন নীতি ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ। এতে করে এই ঐতিহাসিক আসর ঘিরে সম্ভাব্য জটিলতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আয়োজন হতে যাচ্ছে ২০২৬ সালের এই টুর্নামেন্ট। আয়োজকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে মোট ১০৪টি ম্যাচ। এতে অংশ নেবেন কোটি কোটি দর্শক, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা এবং মিডিয়া প্রতিনিধিরা।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে যেসব কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে বিশেষ করে কিছু নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও কঠোর ভিসা বিধিনিষেধ তা বিশ্বকাপের বহুজাতিক চরিত্রে আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষ করে এলজিবিটিআই সম্প্রদায়, অভিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নীতিকে বৈষম্যমূলক বলে মনে করা হচ্ছে। এতে করে অনেক অতিথির জন্য আতিথেয়তার পরিবেশটা হয়ে উঠতে পারে অস্বস্তিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত। পাশাপাশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর সম্ভাব্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। এতে করে বিশ্বকাপের উৎসবমুখর পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
তবে কিছুটা স্বস্তির জায়গাও আছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় ও স্টাফদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে। ফলে দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলেও দর্শক, সাংবাদিক ও পরিবার-পরিজনরা এই ছাড়ের আওতায় পড়বেন না, যা টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতাকে অসম্পূর্ণ করে তুলতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে ফিফা ও একাধিক মানবাধিকার সংস্থা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে:
প্রথমত, বিশ্বকাপের আগেই অভিবাসন ও ভিসা নীতির বিষয়ে স্পষ্ট নীতিমালা ও সময়সীমা প্রকাশ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, এলজিবিটিআই, সাংবাদিক ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তৃতীয়ত, বৈষম্য বা হয়রানির যেকোনো অভিযোগ দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তির জন্য একটি কার্যকর স্বাধীন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি শুধুমাত্র একটি ক্রীড়া টুর্নামেন্ট নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়াম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের সোফি স্টেডিয়ামের মতো বিশ্ববিখ্যাত ভেন্যুগুলোতে খেলা আয়োজনের মাধ্যমে তারা বিশ্বকে দেখাতে পারে বৈচিত্র্য, সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কীভাবে একটি বৈশ্বিক ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করা যায়।
এখন দেখার বিষয় যুক্তরাষ্ট্র এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয়, এবং ২০২৬ বিশ্বকাপকে মাঠের ভেতর ও বাইরে কতটা সফল করে তুলতে পারে। বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীরা তাকিয়ে আছেন সেই উত্তরের দিকে।