প্রশান্ত মহাসাগরে প্রথমবার একসঙ্গে সক্রিয় চীনা দুই ২ বিমানবাহী রণতরি

- আপডেট সময় ০৪:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
- / 14
প্রথমবারের মতো প্রশান্ত মহাসাগরে একযোগে সক্রিয় অবস্থায় দেখা গেছে চীনের দুটি বিমানবাহী রণতরি। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি বেইজিংয়ের দীর্ঘপাল্লার সামরিক উপস্থিতি জোরদারের কৌশলেরই অংশ।
জাপানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার চীনের ‘শানদং’ নামের রণতরিটি চারটি যুদ্ধজাহাজসহ জাপানের অর্থনৈতিক জলসীমায় প্রবেশ করে। ওকিনোটোরি প্রবালদ্বীপের কাছাকাছি ওই এলাকায় চীনা জাহাজগুলোর মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজও রয়েছে। যুদ্ধজাহাজগুলো থেকে নিয়মিত হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে দেখা গেছে।
এর আগে শনিবার, ওই পাঁচটি জাহাজের বহরকে তাইওয়ানের কাছাকাছি মিয়াকো দ্বীপ থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে যাত্রা করতে দেখা যায়। একইসঙ্গে, চীনের আরেকটি বিমানবাহী রণতরি ‘লিয়াওনিং’ এবং এর সঙ্গী জাহাজগুলোও জাপানের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) প্রবেশ করেছিল। যদিও তারা প্রশিক্ষণ শেষে এলাকা ত্যাগ করে।
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “প্রথমবারের মতো প্রশান্ত মহাসাগরে একযোগে দুটি চীনা বিমানবাহী রণতরি সক্রিয় রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, এটি চীনের দীর্ঘপাল্লার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল।”
এ ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মিত্রদেশগুলো উদ্বিগ্ন। মার্কিন ও জাপানি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, চীন ধাপে ধাপে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘প্রথম দ্বীপমালা’ অর্থাৎ জাপান থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রভাবমুক্ত করতে চায়। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ‘দ্বিতীয় দ্বীপমালা’ অঞ্চলের পশ্চিমাংশে সামরিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা, যা ওগাসাওয়ারা দ্বীপপুঞ্জ থেকে শুরু করে গুয়াম পর্যন্ত বিস্তৃত।
সম্প্রতি চীনের ‘লিয়াওনিং’ রণতরিকে দ্বিতীয় দ্বীপমালার বাইরে যেতে দেখা গেছে বলে প্রথমবার নিশ্চিত করেছে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে একই রণতরি তাইওয়ানের কাছাকাছি দুটি জাপানি দ্বীপের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেছিল জাপানি জলসীমায়, যা উপকূল থেকে ২৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত। তখন টোকিও ওই ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করে বেইজিংয়ের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, প্রতিটি দেশ উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অর্থনৈতিক জলসীমার প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ওপর অধিকার রাখে।