গাজায় ভয়াবহ ইসরাইলি হামলা, একদিনে নিহত অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি

- আপডেট সময় ০৬:৪৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
- / 4
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৪ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে রাফাহ সীমান্তে ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন, যাদের অধিকাংশই ক্ষুধার্ত ও চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সময় রোববার (১ জুন) গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। রাফাহ, খান ইউনিস, আল-মাওয়াসি ও জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরসহ অন্তত পাঁচটি স্থানে চালানো হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া মানুষদের আর্তনাদে কেঁপে উঠেছে গোটা উপত্যকা।
রাফাহ সীমান্তে মিশর থেকে পাঠানো ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA)। তারা জানায়, গাজায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেখানে জীবন বাঁচানোর জন্য যাওয়া মানুষরা উল্টো মৃত্যুর মুখে পড়ছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিশর থেকে পাঠানো তিন হাজারের বেশি সহায়তা ট্রাক এখনো গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারেনি। ইসরাইলি সেনাদের বাধার কারণে এ সহায়তা আটকে আছে সীমান্তে। এ অবস্থায় গাজার অধিকাংশ জনগণ নিরাপদ পানি ও খাদ্যবস্তুর চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্তমানে গাজার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছে। ফলে ডায়রিয়া, মেনিনজাইটিসসহ নানা সংক্রামক রোগ ভয়াবহ হারে ছড়িয়ে পড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে অধিকাংশ হাসপাতালেই জরুরি সেবা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজা পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি ও লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। বাগদাদে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের এখনই জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
দিন দিন ভয়াবহ হয়ে ওঠা এই সংকটে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকাও এখন সময়ের দাবি। গাজায় প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে যেন কেউ আর প্রাণ না হারায় সেই নিশ্চিত করাই হওয়া উচিত সবার অগ্রাধিকার।