ঢাকা ১০:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার বিমানঘাঁটি বিধ্বস্ত, দাবি ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:৫১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / 1

ছবি সংগৃহীত

 

ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার (১ জুন) কিয়েভ বেশ কয়েকটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে একযোগে এই আক্রমণ চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল মস্কো থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিমানঘাঁটিগুলো।

রাশিয়ার ইরকুটস্ক অঞ্চলের গভর্নর হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অন্তত ৪০টিরও বেশি রাশিয়ান যুদ্ধবিমান এই ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা (এসবিইউ) একে রাশিয়ান বিমান চলাচলের উপর সবচেয়ে দুঃসাহসিক ও ব্যাপক হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এসবিইউ’র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাশিয়ার অভ্যন্তরে শত্রুপক্ষের কৌশলগত বোমারু বিমান ব্যাপকভাবে জ্বলছে।” ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এসবিইউ পরিচালিত এই অভিযানে রাশিয়ার পিছনের সারির অন্তত চারটি সামরিক বিমানঘাঁটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ওলেনিয়া ও বেলায়ার ঘাঁটি।

এই মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন SBU প্রধান ভাসিল মালিউক, এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নিজে এর তত্ত্বাবধান করেছেন। সূত্র জানায়, অভিযানের জন্য FPV ড্রোন ও কাঠের তৈরি মোবাইল কেবিন রাশিয়ার অভ্যন্তরে পাচার করা হয়। এসব কেবিন ছিল ট্রাকের ওপর, যেগুলোর ছাদ ছিল রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে খোলার ব্যবস্থা। ট্রিগার দিলে ছাদ খুলে আত্মঘাতী ড্রোন উড়ে যায় রুশ বোমারু ঘাঁটির দিকে।

SBU জানিয়েছে, অভিযানে অংশ নেওয়া সব সদস্য ইতোমধ্যেই নিরাপদে ইউক্রেনে ফিরে এসেছে। রাশিয়া যদি কেউকে গ্রেপ্তার দেখায়, সেটি মূলত অভ্যন্তরীণ প্রচারণার উদ্দেশ্যেই সাজানো নাটক হবে বলে জানিয়েছে তারা

রাশিয়ার TU-95, TU-22M3, A-50 এর মতো অত্যন্ত মূল্যবান বিমানগুলোকে লক্ষ্য করেই এই অভিযান চালানো হয়, যার মাধ্যমে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থার সমন্বয়ে পরিচালিত সমন্বিত এই হামলায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিমানঘাঁটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, এই হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ বোমারু বিমান এবং কমপক্ষে একটি নজরদারি বিমান এ-৫০।

প্রাভদা নামের একটি ইউক্রেনীয় প্রকাশনার তথ্য অনুযায়ী, এই আক্রমণ ‘পাভুতিনা’ নামক একটি বিশেষ সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়ার দূরপাল্লার হামলার ক্ষমতা হ্রাস করা।

উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে একটি কৌশলগত অগ্রগতি নির্দেশ করে। এটি রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামোতে বড় ধরনের চাপ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার বিমানঘাঁটি বিধ্বস্ত, দাবি ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের

আপডেট সময় ০৮:৫১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

 

ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার (১ জুন) কিয়েভ বেশ কয়েকটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে একযোগে এই আক্রমণ চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল মস্কো থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিমানঘাঁটিগুলো।

রাশিয়ার ইরকুটস্ক অঞ্চলের গভর্নর হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অন্তত ৪০টিরও বেশি রাশিয়ান যুদ্ধবিমান এই ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা (এসবিইউ) একে রাশিয়ান বিমান চলাচলের উপর সবচেয়ে দুঃসাহসিক ও ব্যাপক হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এসবিইউ’র এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাশিয়ার অভ্যন্তরে শত্রুপক্ষের কৌশলগত বোমারু বিমান ব্যাপকভাবে জ্বলছে।” ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এসবিইউ পরিচালিত এই অভিযানে রাশিয়ার পিছনের সারির অন্তত চারটি সামরিক বিমানঘাঁটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ওলেনিয়া ও বেলায়ার ঘাঁটি।

এই মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন SBU প্রধান ভাসিল মালিউক, এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নিজে এর তত্ত্বাবধান করেছেন। সূত্র জানায়, অভিযানের জন্য FPV ড্রোন ও কাঠের তৈরি মোবাইল কেবিন রাশিয়ার অভ্যন্তরে পাচার করা হয়। এসব কেবিন ছিল ট্রাকের ওপর, যেগুলোর ছাদ ছিল রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে খোলার ব্যবস্থা। ট্রিগার দিলে ছাদ খুলে আত্মঘাতী ড্রোন উড়ে যায় রুশ বোমারু ঘাঁটির দিকে।

SBU জানিয়েছে, অভিযানে অংশ নেওয়া সব সদস্য ইতোমধ্যেই নিরাপদে ইউক্রেনে ফিরে এসেছে। রাশিয়া যদি কেউকে গ্রেপ্তার দেখায়, সেটি মূলত অভ্যন্তরীণ প্রচারণার উদ্দেশ্যেই সাজানো নাটক হবে বলে জানিয়েছে তারা

রাশিয়ার TU-95, TU-22M3, A-50 এর মতো অত্যন্ত মূল্যবান বিমানগুলোকে লক্ষ্য করেই এই অভিযান চালানো হয়, যার মাধ্যমে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থার সমন্বয়ে পরিচালিত সমন্বিত এই হামলায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিমানঘাঁটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, এই হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ বোমারু বিমান এবং কমপক্ষে একটি নজরদারি বিমান এ-৫০।

প্রাভদা নামের একটি ইউক্রেনীয় প্রকাশনার তথ্য অনুযায়ী, এই আক্রমণ ‘পাভুতিনা’ নামক একটি বিশেষ সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়ার দূরপাল্লার হামলার ক্ষমতা হ্রাস করা।

উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে একটি কৌশলগত অগ্রগতি নির্দেশ করে। এটি রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামোতে বড় ধরনের চাপ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স