০৯:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

গাজায় ‘ক্ষুধার্ত মানুষের দল’ হামলা চালিয়ে খাদ্যসামগ্রী লুট করেছে: ডাব্লিউএফপি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 54

ছবি সংগৃহীত

 

 

গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ শহরের একটি খাদ্য গুদামে ‘ক্ষুধার্ত মানুষের দল’ হামলা চালিয়ে খাদ্যসামগ্রী লুট করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি)। এই ঘটনায় গুলির শব্দ শোনা যায় এবং অন্তত দুইজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন। তবে গুলির উৎস সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

এএফপি প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আল-ঘাফারি গুদামে একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢুকে পড়ে। তারা ময়দার বস্তা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। ডাব্লিউএফপি জানায়, গুদামটি থেকে নিয়মিতভাবে খাদ্য বিতরণের পরিকল্পনা ছিল, তবে দীর্ঘমেয়াদি অবরোধের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজা এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে নিপতিত হয়েছে। সম্প্রতি অবরোধ কিছুটা শিথিল করা হলেও খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রীর প্রবেশ এখনও অত্যন্ত সীমিত। ডাব্লিউএফপি এক বিবৃতিতে বলেছে, “গাজায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন। একমাত্র দ্রুত সহায়তা বৃদ্ধি করলেই মানুষকে অনাহার থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।”

সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছিল যে, সাহায্যের পরিমাণ সীমিত রাখা হলে তা একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এই আশঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে—ক্ষুধার্ত মানুষ লুটপাটে নামতে বাধ্য হচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার তারা ১২১টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়, যার মধ্যে ছিল ময়দা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। তবে জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য দূত সিগ্রিদ কাগ এই সহায়তা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “ডুবে যাওয়া জাহাজে লাইফবোট ছোড়া হয়েছে মাত্র।” তিনি বলেন, গাজার মানুষ এখন কার্যত দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ নামে একটি বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ নেটওয়ার্ক গঠিত হয়েছে, যা জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে মার্কিন নিরাপত্তা ঠিকাদারদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ এই উদ্যোগকে ‘অকার্যকর ও নীতিবিরোধী’ বলে অভিহিত করেছে।

জিএইচএফ গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে চারটি বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দাবি, এই কেন্দ্রগুলো হামাসকে ত্রাণ লুটপাট থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, রাফাহ শহরের একটি জিএইচএফ বিতরণ কেন্দ্রে উদ্বোধনের দিনেই ভিড়ের চাপে ৪৭ জন আহত হন। অপর এক জাতিসংঘ কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় জনগণ জাতিসংঘের ট্রাক থেকে সরাসরি ত্রাণসামগ্রী লুট করে নিচ্ছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি অঞ্চল বিষয়ক মানবিক প্রধান জোনাথন হুইটল জানান, হামাসের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ত্রাণ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। বরং গাজার কেরেম শালোম সীমান্তে কিছু অপরাধী গোষ্ঠী ইসরায়েলি বাহিনীর ছত্রছায়ায় এই লুটপাট চালাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

জাতিসংঘ বলছে, পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতির সময় যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবাহ সম্ভব হয়েছিল, বর্তমানেও সেই মাত্রায় সহায়তা পৌঁছাতে পারলে ক্ষুধার্ত মানুষের হাতে খাদ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে এবং লুটপাটও প্রতিহত করা যাবে।

সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় ‘ক্ষুধার্ত মানুষের দল’ হামলা চালিয়ে খাদ্যসামগ্রী লুট করেছে: ডাব্লিউএফপি

আপডেট সময় ০৩:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

 

 

গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ শহরের একটি খাদ্য গুদামে ‘ক্ষুধার্ত মানুষের দল’ হামলা চালিয়ে খাদ্যসামগ্রী লুট করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি)। এই ঘটনায় গুলির শব্দ শোনা যায় এবং অন্তত দুইজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন। তবে গুলির উৎস সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

এএফপি প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আল-ঘাফারি গুদামে একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢুকে পড়ে। তারা ময়দার বস্তা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। ডাব্লিউএফপি জানায়, গুদামটি থেকে নিয়মিতভাবে খাদ্য বিতরণের পরিকল্পনা ছিল, তবে দীর্ঘমেয়াদি অবরোধের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজা এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে নিপতিত হয়েছে। সম্প্রতি অবরোধ কিছুটা শিথিল করা হলেও খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রীর প্রবেশ এখনও অত্যন্ত সীমিত। ডাব্লিউএফপি এক বিবৃতিতে বলেছে, “গাজায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন। একমাত্র দ্রুত সহায়তা বৃদ্ধি করলেই মানুষকে অনাহার থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।”

সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছিল যে, সাহায্যের পরিমাণ সীমিত রাখা হলে তা একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এই আশঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে—ক্ষুধার্ত মানুষ লুটপাটে নামতে বাধ্য হচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার তারা ১২১টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়, যার মধ্যে ছিল ময়দা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। তবে জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য দূত সিগ্রিদ কাগ এই সহায়তা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “ডুবে যাওয়া জাহাজে লাইফবোট ছোড়া হয়েছে মাত্র।” তিনি বলেন, গাজার মানুষ এখন কার্যত দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ নামে একটি বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ নেটওয়ার্ক গঠিত হয়েছে, যা জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে মার্কিন নিরাপত্তা ঠিকাদারদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ এই উদ্যোগকে ‘অকার্যকর ও নীতিবিরোধী’ বলে অভিহিত করেছে।

জিএইচএফ গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে চারটি বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দাবি, এই কেন্দ্রগুলো হামাসকে ত্রাণ লুটপাট থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, রাফাহ শহরের একটি জিএইচএফ বিতরণ কেন্দ্রে উদ্বোধনের দিনেই ভিড়ের চাপে ৪৭ জন আহত হন। অপর এক জাতিসংঘ কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় জনগণ জাতিসংঘের ট্রাক থেকে সরাসরি ত্রাণসামগ্রী লুট করে নিচ্ছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি অঞ্চল বিষয়ক মানবিক প্রধান জোনাথন হুইটল জানান, হামাসের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ত্রাণ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। বরং গাজার কেরেম শালোম সীমান্তে কিছু অপরাধী গোষ্ঠী ইসরায়েলি বাহিনীর ছত্রছায়ায় এই লুটপাট চালাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

জাতিসংঘ বলছে, পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতির সময় যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবাহ সম্ভব হয়েছিল, বর্তমানেও সেই মাত্রায় সহায়তা পৌঁছাতে পারলে ক্ষুধার্ত মানুষের হাতে খাদ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে এবং লুটপাটও প্রতিহত করা যাবে।

সূত্র: বিবিসি