জার্মানির ‘টরাস’ সহায়তায় উত্তপ্ত ইউক্রেন যুদ্ধ: মস্কোর হুমকি বার্লিনে হামলার

- আপডেট সময় ১১:১১:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / 7
জার্মান সরকার ইউক্রেনকে নিজেদের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার বার্লিনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ।
চ্যান্সেলর বলেন, “আজ আমাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ইউক্রেনীয় নির্মিত দূরপাল্লার যুদ্ধ ব্যবস্থা সরবরাহের জন্য একটি স্মারকলিপি স্বাক্ষর করবেন। আমরা সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখব এবং ভবিষ্যতে তা আরও জোরদার করব। যতদিন প্রয়োজন, জার্মানি পাশে থাকবে।”
তিনি আরও জানান, এই সহায়তা শুধু প্রতিরক্ষা খাতে নয়, বরং শিল্প খাতেও যৌথভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, যার সুফল পাবে উভয় দেশ।
এই ঘোষণার পর রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি’র প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি জার্মানির সরবরাহকৃত ‘টরাস ক্ষেপণাস্ত্র’ দিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ায় হামলা চালায়, তাহলে মস্কো বার্লিনে হামলার বিষয়টি উড়িয়ে দেবে না।
সিমোনিয়ান বলেন, “যদি ‘টরাস’ ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়, জার্মানি ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হবে। কারণ ইউক্রেনীয় বাহিনী এককভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রোগ্রাম করতে সক্ষম নয়। জার্মান পরিষেবা সদস্যদেরই এ কাজ করতে হবে, অর্থাৎ যুদ্ধ সরাসরি জার্মানির ঘাড়ে পড়বে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, টরাস ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার, যা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকেই রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে হামলা চালাতে সক্ষম। এ অবস্থায় যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জার্মানির নতুন এই অবস্থান এমন সময়ে এলো যখন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় কূটনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
রুশ পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, পূর্ববর্তী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস টরাস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে বরাবরই আপত্তি জানিয়েছিলেন। তার যুক্তি ছিল, এতে জার্মানি সরাসরি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু নতুন চ্যান্সেলরের নীতিগত এই পরিবর্তন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “যদি সত্যিই টরাস সরবরাহ করা হয়, তবে তা বর্তমান শান্তি প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং উত্তেজনা আরও বাড়াবে।”
এখন সময়ই বলে দেবে, জার্মানির এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনকে কতটা শক্তিশালী করবে এবং ইউরোপকে কতটা নিরাপত্তাহীনতার পথে ঠেলে দেবে।