বাবা-মা খুনের পর মাদ্রাসায় হামলা: ছুরিকাঘাতে আহত আরো ৪

- আপডেট সময় ১০:৫৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / 15
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁতে ভয়াবহ এক ছুরি হামলায় রক্তাক্ত হল একটি এতিমখানার মাদরাসা। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানার অন্তর্গত মতিগঞ্জ এলাকার একটি মসজিদ পরিচালিত মাদরাসায় ঢুকে ছুরি হাতে তাণ্ডব চালায় হুমায়ূন কবীর নামের এক যুবক। তার ছুরির আঘাতে আহত হন শিক্ষক ও কর্মচারীসহ অন্তত চারজন।
তবে এই ঘটনাই তার সহিংসতার শুরু নয়। এর আগে ওইদিন ভোরে পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারির কাশিয়ারা কাজীপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে নিজের বাবা-মাকে কুপিয়ে খুন করে হুমায়ূন। নিহতরা হলেন মুস্তাফিজুর রহমান (৬৬) ও মমতাজ পারভিন (৫৬)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন হুমায়ূন। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ঘরের ভেতর খুন করার পর লাশ বাইরে টেনে এনে রাস্তায় ফেলে দেন তিনি। স্থানীয়রা সকালে পথ চলার সময় গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। লাশ দুটি উদ্ধার করে পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক ব্যানার্জিও।
বিকেলে, মাদরাসায় হুমায়ূনের ছুরি হামলার খবরে নড়েচড়ে বসে বনগাঁ থানার পুলিশ। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ আহতদের বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে এবং অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ূন কবীর তার বাবা-মাকে খুন ও মাদরাসায় হামলার ঘটনা স্বীকার করে। তবে এ ধরনের নৃশংসতার কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। সন্ধ্যার পর অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ জন স্থানীয় মানুষ থানার সামনে জড়ো হয়ে হুমায়ূনকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করে। পুলিশ বাধা দিলে উত্তেজিত জনতা থানায় হামলার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং ১০ জনকে আটক করে।
ঘটনা প্রসঙ্গে বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, “৩৫ বছর বয়সী হুমায়ূন কবীর প্রথমে নিজের বাবা-মাকে খুন করে, পরে মাদরাসায় ঢুকে চারজনকে ছুরিকাঘাত করে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এই রকম নারকীয় ঘটনায় এলাকাজুড়ে চলছে তীব্র চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক।