ঢাকা ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৫০ বাংলাদেশি: মানবপাচারের ফাঁদ থেকে মুক্তি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:২৯:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • / 18

ছবি: সংগৃহীত

 

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন মানবপাচারের ফাঁদে পড়া ১৫০ জন বাংলাদেশি নাগরিক। ইউরোপে পাড়ি জমানোর আশায় অনিয়মিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন তারা। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা ২৫ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর যৌথ উদ্যোগে লিবিয়ার বেনগাজি ও আশপাশের অঞ্চল থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান।

দেশে ফেরা নাগরিকদের অধিকাংশই ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় সমুদ্রপথে লিবিয়ায় পৌঁছান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর তারা নিপীড়ন, অপহরণ ও বিভিন্ন রকম শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। অনেকেই ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন দীর্ঘদিন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, “এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা যেন আর কেউ ভোগ না করে, সেজন্য সচেতনতা তৈরিতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মানবপাচারকারীদের হাত থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে সামাজিক উদ্যোগ জরুরি।”

ফিরে আসা প্রতিটি নাগরিককে আইওএম-এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্যসামগ্রী, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা।

সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে যতদিন না সব বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হলে শুধু আইন প্রয়োগই নয়, দরকার জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচনে কার্যকর উদ্যোগ।

এই প্রত্যাবাসন ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে, মানবপাচারের জাল কতটা ভয়াবহ হতে পারে, আর কেন এই বিপজ্জনক পথ এড়িয়ে নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন ব্যবস্থার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

লিবিয়া থেকে ফিরে আসা এই ১৫০ জন মানুষ এক জীবন্ত সাক্ষ্য যে, স্বপ্নের ইউরোপ যাত্রা কেবলই দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে যদি তা হয় অনিয়মিত পথে। মানবপাচারের বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে এখনই।

নিউজটি শেয়ার করুন

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৫০ বাংলাদেশি: মানবপাচারের ফাঁদ থেকে মুক্তি

আপডেট সময় ০৫:২৯:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

 

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন মানবপাচারের ফাঁদে পড়া ১৫০ জন বাংলাদেশি নাগরিক। ইউরোপে পাড়ি জমানোর আশায় অনিয়মিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন তারা। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা ২৫ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর যৌথ উদ্যোগে লিবিয়ার বেনগাজি ও আশপাশের অঞ্চল থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান।

দেশে ফেরা নাগরিকদের অধিকাংশই ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় সমুদ্রপথে লিবিয়ায় পৌঁছান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর তারা নিপীড়ন, অপহরণ ও বিভিন্ন রকম শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। অনেকেই ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন দীর্ঘদিন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, “এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা যেন আর কেউ ভোগ না করে, সেজন্য সচেতনতা তৈরিতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মানবপাচারকারীদের হাত থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে সামাজিক উদ্যোগ জরুরি।”

ফিরে আসা প্রতিটি নাগরিককে আইওএম-এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্যসামগ্রী, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা।

সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে যতদিন না সব বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হলে শুধু আইন প্রয়োগই নয়, দরকার জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচনে কার্যকর উদ্যোগ।

এই প্রত্যাবাসন ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে, মানবপাচারের জাল কতটা ভয়াবহ হতে পারে, আর কেন এই বিপজ্জনক পথ এড়িয়ে নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন ব্যবস্থার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

লিবিয়া থেকে ফিরে আসা এই ১৫০ জন মানুষ এক জীবন্ত সাক্ষ্য যে, স্বপ্নের ইউরোপ যাত্রা কেবলই দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে যদি তা হয় অনিয়মিত পথে। মানবপাচারের বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে এখনই।