ঢাকা ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইয়েমেনর সানা বিমানবন্দরে ইসরায়েলের হামলা, উত্তেজনা তুঙ্গে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • / 5

ছবি সংগৃহীত

 

 

ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বুধবার হামলা চালিয়েছে। ইরান সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দু’পক্ষই এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হুতির মালিকানাধীন আল-মাসিরাহ টেলিভিশন এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, ‘সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি আগ্রাসন।’ পরে তারা দাবি করে, একাধিক হামলায় বিমানবন্দরের রানওয়ে ও একটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, হুতি গোষ্ঠীর ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলার জন্য যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছিল। এর একদিন আগেই হুতি গোষ্ঠী ইসরায়েলের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, হামলায় হুতির মালিকানাধীন কিছু বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ধ্বংস করা বিমানগুলো হুতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যবহৃত করত, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানায়, ‘যেমনভাবে হোদেইদা ও সালিফ বন্দরের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল, তেমনি সানার বিমানবন্দরও হুতিদের শাসনে পরিচালিত এবং সন্ত্রাসী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সাল থেকে সানা বিমানবন্দর জাতিসংঘের মানবিক ফ্লাইট এবং আম্মান থেকে সীমিত সংখ্যক বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর আগেও ৬ মে ইসরায়েল একই বিমানবন্দরে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়, হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায়। পরে ১৭ মে হুতি কর্তৃপক্ষ জানায়, সানা বিমানবন্দরে সীমিত ফ্লাইট চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই হুতি গোষ্ঠী লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা শুরু করে। এর জবাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পাল্টা হামলা চালায়। চলতি মে মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালেও, গাজা সংকটের প্রেক্ষাপটে হুতি আবার ইসরায়েলের দিকে হামলা শুরু করে, যার মধ্যে তেল আবিবের বেন গুরিওন বিমানবন্দরে হামলাও রয়েছে।

সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে তারা ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে নৌ অবরোধ আরোপ করতে পারে। এর আগেও গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সময় তারা হামলা বন্ধ রেখেছিল, যা মার্চে ভেঙে পড়ে।

উল্লেখ্য, ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং এটি বিশ্বে অন্যতম মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে, যদিও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের এক যুদ্ধবিরতির পর সংঘর্ষ কিছুটা হ্রাস পায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইয়েমেনর সানা বিমানবন্দরে ইসরায়েলের হামলা, উত্তেজনা তুঙ্গে

আপডেট সময় ০৫:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

 

 

ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বুধবার হামলা চালিয়েছে। ইরান সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দু’পক্ষই এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হুতির মালিকানাধীন আল-মাসিরাহ টেলিভিশন এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, ‘সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি আগ্রাসন।’ পরে তারা দাবি করে, একাধিক হামলায় বিমানবন্দরের রানওয়ে ও একটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, হুতি গোষ্ঠীর ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলার জন্য যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছিল। এর একদিন আগেই হুতি গোষ্ঠী ইসরায়েলের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, হামলায় হুতির মালিকানাধীন কিছু বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ধ্বংস করা বিমানগুলো হুতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যবহৃত করত, যারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানায়, ‘যেমনভাবে হোদেইদা ও সালিফ বন্দরের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল, তেমনি সানার বিমানবন্দরও হুতিদের শাসনে পরিচালিত এবং সন্ত্রাসী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সাল থেকে সানা বিমানবন্দর জাতিসংঘের মানবিক ফ্লাইট এবং আম্মান থেকে সীমিত সংখ্যক বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর আগেও ৬ মে ইসরায়েল একই বিমানবন্দরে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়, হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায়। পরে ১৭ মে হুতি কর্তৃপক্ষ জানায়, সানা বিমানবন্দরে সীমিত ফ্লাইট চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই হুতি গোষ্ঠী লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা শুরু করে। এর জবাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পাল্টা হামলা চালায়। চলতি মে মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালেও, গাজা সংকটের প্রেক্ষাপটে হুতি আবার ইসরায়েলের দিকে হামলা শুরু করে, যার মধ্যে তেল আবিবের বেন গুরিওন বিমানবন্দরে হামলাও রয়েছে।

সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে তারা ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে নৌ অবরোধ আরোপ করতে পারে। এর আগেও গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সময় তারা হামলা বন্ধ রেখেছিল, যা মার্চে ভেঙে পড়ে।

উল্লেখ্য, ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং এটি বিশ্বে অন্যতম মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে, যদিও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের এক যুদ্ধবিরতির পর সংঘর্ষ কিছুটা হ্রাস পায়।