যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘গোল্ডেন ডোম’ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ

- আপডেট সময় ১১:০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- / 12
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন মহাকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘গোল্ডেন ডোম’ ঘিরে বিশ্বজুড়ে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এটি শুধু একটি উচ্চপ্রযুক্তির প্রতিরক্ষা প্রকল্প নয়, বরং নতুন এক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
‘গোল্ডেন ডোম’ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের হাইপারসনিক ও পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের জন্য নির্মিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, চলতি বছরেই এটি পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর হবে। প্রথম ধাপে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলার, যা ভবিষ্যতে বিশ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ওয়াশিংটন। উত্তর কোরিয়া এটিকে ‘উসকানিমূলক’ এবং ‘অহংকারের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশকে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাব্য ময়দানে পরিণত করছে। দেশটির দাবি, এই উদ্যোগ বিশ্বশান্তির জন্য এক বিপজ্জনক মোড়।
চীনও এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, যুক্তরাষ্ট্র কেবল নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়েই থেমে থাকছে না, বরং অন্য দেশের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলছে। বেইজিং ‘গোল্ডেন ডোম’-এর আক্রমণাত্মক বৈশিষ্ট্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রভাণ্ডার কার্যকারিতা হারাতে পারে। ফলে পিয়ংইয়ং বিকল্প হামলা কৌশলের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে উত্তর কোরিয়া নিজেকে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং এরপর থেকেই নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রতিরক্ষা শক্তি এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছালেও, বিশ্বব্যাপী একটি নতুন পারমাণবিক ও মহাকাশ প্রতিযোগিতার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘গোল্ডেন ডোম’ কার্যকর হলে কৌশলগত সাম্যাবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে, যা ভবিষ্যতের বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।