গা/জা/র কৃষি ধ্বংসের মুখে, দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে অর্ধকোটি মানুষ: জাতিসংঘ

- আপডেট সময় ১২:৫৮:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
- / 3
গাজা উপত্যকায় কৃষিজমির মাত্র ৪.৬ শতাংশ বর্তমানে চাষের উপযোগী রয়েছে। যুদ্ধজনিত ধ্বংস, অবকাঠামোগত ক্ষয় এবং জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাকি প্রায় ৯৫ শতাংশ জমি এখন অচাষযোগ্য। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং জাতিসংঘ স্যাটেলাইট সেন্টারের যৌথ মূল্যায়নে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এফএও-এর উপমহাপরিচালক বেথ বেকডল বলেন, “এই ধ্বংস কেবল অবকাঠামোর নয়, এটি গাজার কৃষিনির্ভর খাদ্যব্যবস্থার সম্পূর্ণ পতন এবং মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সংকেত।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ গাজার ৮০ শতাংশের বেশি কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রায় ৭৭.৮ শতাংশ জমিতে প্রবেশ করা যায় না। এতে করে গাজায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪.৬ শতাংশে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে কৃষি খাত গাজার মোট অর্থনীতির প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে ছিল এবং ৫ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ কৃষিকাজ, পশুপালন বা মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
উচ্চ রেজোলিউশনের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, গাজায় ৮০ শতাংশেরও বেশি নলকূপ এবং প্রায় তিন-চতুর্থাংশ গ্রীনহাউজ ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ জানায়, বিশেষ করে রাফাহসহ উত্তরাঞ্চলে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক, যেখানে প্রায় সব কৃষিজমিই এখন অচাষযোগ্য। দক্ষিণাঞ্চলেও একইভাবে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।
বেথ বেকডল আরও বলেন, “গাজার কৃষি খাতের এই বিপর্যয় শুধু খাদ্য উৎপাদনের সংকট নয়, এটি একটি জাতির খাদ্যনিরাপত্তা ও জীবিকার অস্তিত্বের ওপর আঘাত।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি দ্রুত কৃষি পুনর্গঠনের উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে গাজা অচিরেই পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে। জাতিসংঘ এই পরিস্থিতিকে “নজিরবিহীন মানবিক সংকট” বলে অভিহিত করেছে।
যুদ্ধের আগে গাজায় মাল্টা, খেজুর ও জলপাইসহ নানা কৃষিপণ্য উৎপাদন হতো। কিন্তু ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর ১৯ মাস পর টানা ১১ সপ্তাহের অবরোধে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য আমদানিতে কড়াকড়ির ফলে অর্ধকোটি মানুষ আজ খাদ্য সংকটে ভুগছে, যাদের অনেকেই জীবন-মরণ সংকটে রয়েছেন।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই, রয়টার্স