ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার সহজ ও ঘরোয়া উপায় ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪০৬ জন হত্যা ও খুন মামলাসহ পুরনো মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল বিদেশফেরত রংমিস্ত্রি থেকে সফল কৃষি উদ্যোক্তা: আফজাল শেখের রাম্বুটান বিপ্লব কলটি বিবিসি উদ্ধার করেনি, এটা ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি: চিফ প্রসিকিউটর ১ লাখ শিক্ষক নিয়োগে পুলিশের ভেরিফিকেশন: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা দুর্নীতিবাজ, দখলদার ও চাঁদাবাজদের না বলুন, যারা ওদের পক্ষে তাঁদের বয়কট করুন: নাহিদ ইসলাম রাজস্থানে ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: নিহত দুই পাইলট বাগেরহাটে ডাকাতিকৃত মালামাল সহ ৭ ডাকাত আটক বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রধান

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৫৯৭ অভিবাসী আটক: ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
  • / 18

ছবি সংগৃহীত

 

কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া – মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যে একটি নির্মাণাধীন স্থানে অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিসহ অন্তত ৫৯৭ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে, ২০২৫) পরিচালিত এই অভিযানে মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাদের আটক করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এটি অন্যতম বৃহৎ অভিযান।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ গণমাধ্যমকে জানান, অভিবাসন বিভাগ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেলাঙ্গর রাজ্যের নির্মাণাধীন ভবনটিতে অভিযান চালায়। এই অভিযানে মোট ১ হাজার ৫৪ জন বিদেশি নাগরিকের কাগজপত্র যাচাই করা হয়। তাদের মধ্যে ৫৯৭ জনের কাছে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বা ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, ভারত এবং পাকিস্তানের নাগরিকরাও রয়েছেন। দাতুক রুসলিন জুসোহ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, আটককৃতদের বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অথবা তাদের কাছে কোনো বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নেই।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইনের ১৯৫৯/৬৩ ধারার অধীনে তদন্ত করা হচ্ছে। এই ধারার অধীনে যাদের কাছে বৈধ ভ্রমণ নথি নেই, ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিবাসন বিভাগ জানিয়েছে, আটককৃতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং কোভিড-১৯ প্রটোকল মেনে তাদের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হবে। এরপর আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যার মধ্যে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও রয়েছে।

মালয়েশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশটির সরকার দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সুরক্ষার অজুহাতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বড় আকারের ধরপাকড় অভিযান চালানো হয়েছে, যেখানে বহু বাংলাদেশি শ্রমিক আটক হয়েছেন। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যারা অবৈধভাবে দেশটিতে অবস্থান করছেন বা কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই অভিযান মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বৈধ কাগজপত্রবিহীন শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত আটকের আতঙ্কে থাকেন। অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করা বা ভিসার মেয়াদ নবায়ন না করায় অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই ধরনের অভিযানগুলো একদিকে যেমন মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে, তেমনি অন্যদিকে বাংলাদেশেও শ্রমিকদের পরিবারে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মালয়েশিয়ায় নিয়মিত শ্রমবাজার চালু রাখতে এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকি সম্পর্কে শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিও জরুরি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৫৯৭ অভিবাসী আটক: ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান

আপডেট সময় ০৩:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

 

কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া – মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যে একটি নির্মাণাধীন স্থানে অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিসহ অন্তত ৫৯৭ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে, ২০২৫) পরিচালিত এই অভিযানে মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাদের আটক করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এটি অন্যতম বৃহৎ অভিযান।

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ গণমাধ্যমকে জানান, অভিবাসন বিভাগ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেলাঙ্গর রাজ্যের নির্মাণাধীন ভবনটিতে অভিযান চালায়। এই অভিযানে মোট ১ হাজার ৫৪ জন বিদেশি নাগরিকের কাগজপত্র যাচাই করা হয়। তাদের মধ্যে ৫৯৭ জনের কাছে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বা ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, ভারত এবং পাকিস্তানের নাগরিকরাও রয়েছেন। দাতুক রুসলিন জুসোহ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, আটককৃতদের বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অথবা তাদের কাছে কোনো বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নেই।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইনের ১৯৫৯/৬৩ ধারার অধীনে তদন্ত করা হচ্ছে। এই ধারার অধীনে যাদের কাছে বৈধ ভ্রমণ নথি নেই, ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিবাসন বিভাগ জানিয়েছে, আটককৃতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং কোভিড-১৯ প্রটোকল মেনে তাদের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হবে। এরপর আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যার মধ্যে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও রয়েছে।

মালয়েশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশটির সরকার দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সুরক্ষার অজুহাতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বড় আকারের ধরপাকড় অভিযান চালানো হয়েছে, যেখানে বহু বাংলাদেশি শ্রমিক আটক হয়েছেন। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যারা অবৈধভাবে দেশটিতে অবস্থান করছেন বা কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই অভিযান মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বৈধ কাগজপত্রবিহীন শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত আটকের আতঙ্কে থাকেন। অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করা বা ভিসার মেয়াদ নবায়ন না করায় অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই ধরনের অভিযানগুলো একদিকে যেমন মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে, তেমনি অন্যদিকে বাংলাদেশেও শ্রমিকদের পরিবারে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মালয়েশিয়ায় নিয়মিত শ্রমবাজার চালু রাখতে এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকি সম্পর্কে শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিও জরুরি।