ঢাকা ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তারেক রহমানের অভিনন্দন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়কে জনতার ঢল করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৭ জন শিক্ষা সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযোগী মানুষ গড়ে তোলে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা পরিবেশই নয়, অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্যও টিকিয়ে রাখতে বন নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি: রিজওয়ানা জোটবদ্ধ ইসলামি দলই আগামী দিনে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে: চরমোনাই পীর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবির ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে গ্রেফতার ১,৫৪০ জন

গাজায় ইউরোপীয় হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২৮ জন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:৫১:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / 22

ছবি সংগৃহীত

 

গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। হামাস-পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান একযোগে ছয়টি বোমা ফেলেছে হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশে, যার ফলে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ আঙিনা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী জাবালিয়া এলাকায় অন্তত চারটি পৃথক হামলা চালিয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, গাজায় হামলার মাত্রা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি। মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

নাসের ও ইউরোপীয় হাসপাতালে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর এসব নতুন হামলা শুরু হয়। নিহতদের মধ্যে এক সাংবাদিকও রয়েছেন, যিনি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলাগুলো চালিয়েছে আশকেলন ও সেদেরোতে ইসলামিক জিহাদের রকেট হামলার পর, যখন তারা গাজার কিছু অংশে জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির নির্দেশ দেয়। গাজা ইউরোপিয়ান হাসপাতালের ভিতরে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, বিস্ফোরণে হাসপাতালের সামনে দাঁড়ানো একাধিক গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় আকাশে ড্রোন নজরদারি চালাচ্ছিল, যা উদ্ধারকাজ ব্যাহত করে।

একটি ছোট ড্রোন থেকে চালানো হামলায় আহত হন দুইজন সিভিল ডিফেন্স কর্মী, যারা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা আইডিয়ালস-এর প্লাস্টিক সার্জন ডা. টম পোতকার বলেন, “আমি ভেতরে ছিলাম, তখন একের পর এক ছয়টি বিশাল বিস্ফোরণ হয়। কোনো সতর্কতা ছাড়াই এসব হামলা চালানো হয়, পুরো হাসপাতাল আতঙ্কে অস্থির হয়ে ওঠে।”

আহতদের স্থানীয় নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সেই হাসপাতালেও এর আগেই হামলা হয়েছিল, ফলে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার নাসের হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও হামলা হয়, যেখানে নিহত হন দুইজন, তাদের একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি ফটোসাংবাদিক হাসান আসলিহ।

হাসান আসলিহ এক মাস ধরে নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার বিভাগে তার ওপর লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তিনি ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থা আইএসএ যৌথ বিবৃতিতে জানায়, হামাস এখনো গাজার হাসপাতালগুলোকে তাদের সামরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে—যা হামাস বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

ইসরায়েলি মিডিয়ার দাবি, ইউরোপিয়ান হাসপাতাল লক্ষ্যবস্তু করার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যা করা, যিনি বর্তমানে গাজায় হামাসের সামরিক শাখার নেতৃত্বে রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ছোড়া দুটি রকেট তারা প্রতিহত করেছে। এই রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখা।

সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় ইউরোপীয় হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২৮ জন

আপডেট সময় ০৯:৫১:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

 

গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। হামাস-পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান একযোগে ছয়টি বোমা ফেলেছে হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশে, যার ফলে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ আঙিনা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী জাবালিয়া এলাকায় অন্তত চারটি পৃথক হামলা চালিয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, গাজায় হামলার মাত্রা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি। মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

নাসের ও ইউরোপীয় হাসপাতালে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর এসব নতুন হামলা শুরু হয়। নিহতদের মধ্যে এক সাংবাদিকও রয়েছেন, যিনি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলাগুলো চালিয়েছে আশকেলন ও সেদেরোতে ইসলামিক জিহাদের রকেট হামলার পর, যখন তারা গাজার কিছু অংশে জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির নির্দেশ দেয়। গাজা ইউরোপিয়ান হাসপাতালের ভিতরে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, বিস্ফোরণে হাসপাতালের সামনে দাঁড়ানো একাধিক গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় আকাশে ড্রোন নজরদারি চালাচ্ছিল, যা উদ্ধারকাজ ব্যাহত করে।

একটি ছোট ড্রোন থেকে চালানো হামলায় আহত হন দুইজন সিভিল ডিফেন্স কর্মী, যারা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা আইডিয়ালস-এর প্লাস্টিক সার্জন ডা. টম পোতকার বলেন, “আমি ভেতরে ছিলাম, তখন একের পর এক ছয়টি বিশাল বিস্ফোরণ হয়। কোনো সতর্কতা ছাড়াই এসব হামলা চালানো হয়, পুরো হাসপাতাল আতঙ্কে অস্থির হয়ে ওঠে।”

আহতদের স্থানীয় নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সেই হাসপাতালেও এর আগেই হামলা হয়েছিল, ফলে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার নাসের হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও হামলা হয়, যেখানে নিহত হন দুইজন, তাদের একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি ফটোসাংবাদিক হাসান আসলিহ।

হাসান আসলিহ এক মাস ধরে নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার বিভাগে তার ওপর লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তিনি ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থা আইএসএ যৌথ বিবৃতিতে জানায়, হামাস এখনো গাজার হাসপাতালগুলোকে তাদের সামরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে—যা হামাস বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

ইসরায়েলি মিডিয়ার দাবি, ইউরোপিয়ান হাসপাতাল লক্ষ্যবস্তু করার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যা করা, যিনি বর্তমানে গাজায় হামাসের সামরিক শাখার নেতৃত্বে রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ছোড়া দুটি রকেট তারা প্রতিহত করেছে। এই রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখা।

সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা