যুদ্ধবিরতির মাঝেই মায়ানমারে স্কুলে বিমান হামলা, নিহত ১৭ শিক্ষার্থী

- আপডেট সময় ০৪:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
- / 41
মায়ানমারে সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশজুড়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও থেমে থাকেনি জান্তা বাহিনীর সহিংসতা। বিরোধী বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সাগাইং অঞ্চলের দেপাইন শহরের একটি স্কুলে জান্তা সরকারের বিমান হামলায় অন্তত ১৭ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ২০ জন। সোমবার এ মর্মান্তিক হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহতদের সবাই দেপাইন শহরের ঐ স্কুলের ছাত্র। স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছিল ছায়া সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ (এনইউজি)-এর তত্ত্বাবধানে। এনইউজির মুখপাত্র নে ফোন ল্যাট জানান, ‘প্রাথমিক তথ্যে আমরা ১৭ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু ও ২০ জনের আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে ধ্বংসস্তূপে আরও অনেকে চাপা পড়ে থাকতে পারে, ফলে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।’
দেপাইন শহরটি মান্ডালয়ের উত্তরে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে সাগাইং অঞ্চলে অবস্থিত, যা ২৮ মার্চ সংঘটিত বিধ্বংসী ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মায়ানমারে জান্তা বাহিনীর দমন-পীড়ন ও সহিংসতা বাড়তে থাকে। বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন এনইউজি ও বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী একত্র হয়ে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর জান্তা সরকার ৩১ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল, যাতে করে ত্রাণ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলতে পারে। বিরোধী পক্ষগুলোও একই ধরনের যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
তবে এই ঘোষণার মধ্যেই সাগাইংসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনী। ফলে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার বাস্তবতা ও সেনা সরকারের প্রতিশ্রুতির সত্যতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এই হামলার বিষয়ে জান্তা সরকারের এক মুখপাত্র মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এনইউজি গঠিত হয় ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত নির্বাচিত নেতাদের সমন্বয়ে। তখন থেকেই তারা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
এ ধরনের বর্বর হামলা শুধু যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গই নয়, বরং তা মায়ানমারের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরও এক অমানবিক আঘাত বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।