শনিবার শীর্ষ বৈঠকে বসবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন: বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে নতুন উদ্যোগ

- আপডেট সময় ০৫:৪১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
- / 10
বিশ্ব অর্থনীতিতে চলমান অস্থিরতা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আসছে শনিবার (১০ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছেন দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও প্রধান বাণিজ্য আলোচক জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নেবেন চীনের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারক হে লিফেং। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বৈঠকের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পরপরই ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বিশ্ববাজারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইকুইটি ইনডেক্স ফিউচারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চীন ও হংকংয়ের শেয়ারবাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আমদানি শুল্ক আরোপের ফলে উত্তেজনা চূড়ায় পৌঁছায়। আমদানি পণ্যে শুল্ক বেড়ে ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতিকে ‘প্রায় বাণিজ্য অবরোধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্ট।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আসন্ন বৈঠকে শুল্ক হ্রাস, নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নীতিসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে।
বৈঠকের ঘোষণার পর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, “এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে চলমান উত্তেজনা হ্রাস এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা।”
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও বৈঠকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “বিশ্বের প্রত্যাশা, চীনের স্বার্থ এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প ও ভোক্তাদের দাবি বিবেচনায় নিয়েই আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তবে চীন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, “চীনা প্রবাদে যেমন বলা হয় কী বলা হলো তা শোনা জরুরি, কিন্তু কী করা হলো তা দেখা আরও জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রকাশ্যে একরকম বলেও পর্দার আড়ালে ভিন্ন কাজ করে কিংবা চাপ প্রয়োগের কৌশল নেয়, তাহলে চীন কখনোই তাতে সায় দেবে না।”
এদিকে, চীনের রপ্তানিনির্ভর শিল্পখাত চরম চাপে রয়েছে। জাপানের বিনিয়োগ ব্যাংক নোমুরা পূর্বাভাস দিয়েছে, চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে চীনে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ চাকরিহীন হতে পারেন।
এই সংকট মোকাবেলায় চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার নতুন আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সুদের হার হ্রাস এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নগদ অর্থ সরবরাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ। বিশ্লেষকরা এটিকে সময়োপযোগী ও কৌশলগত উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।
এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে একটি স্থিতিশীল বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।