শুল্কনীতিতে বিপাকে জুতা শিল্প, ট্রাম্পকে নাইকি-অ্যাডিডাসের চিঠি

- আপডেট সময় ১১:০৯:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
- / 23
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক শুল্কনীতি এবার চরম সংকটে ফেলেছে দেশটির সম্ভাবনাময় জুতা শিল্পকে। ব্যয়বৃদ্ধি, অর্ডার বাতিল, ও কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় ব্যবসায় ধস নামতে চলেছে—এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে নাইকি, অ্যাডিডাসসহ ৭৬টি বৃহৎ জুতার ব্র্যান্ড।
‘আমেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগানে বিশ্ব বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব আরও জোরদার করতে ট্রাম্প প্রশাসন যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে, তা উল্টো মার্কিন শিল্প খাতকেই বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে। বিশেষত জুতা শিল্পে এর প্রভাব মারাত্মক—যেখানে খরচ বাড়ছে ১৫০ থেকে ২২০ শতাংশ পর্যন্ত।
সম্প্রতি ‘ফুটওয়্যার ডিস্ট্রিবিউটরস অ্যান্ড রিটেইলারস অব আমেরিকা’ (FDRA) এর পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে এক চিঠি পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয়—বর্তমান শুল্কনীতির কারণে জুতা শিল্প অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। চিঠিতে ৭৬টি কোম্পানির যৌথ স্বাক্ষর রয়েছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছে, এই শুল্কের বোঝা কেবল ব্যবসায়ী নয়, ভোক্তাদের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অস্বাভাবিকভাবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় একের পর এক অর্ডার বাতিল হচ্ছে, যা বহু প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ হওয়ার পথে ঠেলে দিচ্ছে। এতে হাজার হাজার কর্মীর চাকরি ঝুঁকিতে পড়েছে।
জুতা উৎপাদনকারীদের সংগঠন FDRA বলছে, অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসায়িক মডেল বদলানো সম্ভব নয়। ফলে নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছে উদ্যোক্তারা। এতে যুক্তরাষ্ট্রে জুতা শিল্পের সম্প্রসারণ প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি দীর্ঘমেয়াদে আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তারা বলছেন, এই নীতির মাধ্যমে বাণিজ্যযুদ্ধ বাড়ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে স্থানীয় শিল্পে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি মূলত চীনসহ কিছু নির্দিষ্ট দেশের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দেশীয় শিল্প সুরক্ষা ও বৈদেশিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব জোরদারের লক্ষ্যেই চালু হয়েছিল। তবে বাস্তবে এই নীতি দেশীয় শিল্প খাতেরই ক্ষতি ডেকে আনছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় ব্যবসা রক্ষায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ত্বরিত সিদ্ধান্ত ও হস্তক্ষেপ দাবি করেছে জুতা শিল্প সংশ্লিষ্টরা। এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্প প্রশাসন এ আহ্বানে কী ধরনের সাড়া দেয়।