ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে ট্রাম্পীয় রাজনীতির পরাজয়, দ্বিতীয় মেয়াদে বিজয়ী আলবানিজ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / 43

ছবি সংগৃহীত

 

অস্ট্রেলিয়ার সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে শুধু বিরোধী নেতা পিটার ডাটনের পরাজয় নয় হার হয়েছে এক ধরনের রাজনীতিরও। দেশটির গণমাধ্যম বলছে, ডাটন প্রচারণায় ছিলেন ট্রাম্পীয় কট্টর রক্ষণশীল বার্তা ও বিভাজনমূলক অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু অস্ট্রেলীয় ভোটাররা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন এ ধরনের রাজনীতি এখানে চলবে না।

অ্যান্থনি আলবানিজ দ্বিতীয় মেয়াদে পরপর জয় পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০ আসনের মধ্যে লেবার পার্টি অন্তত ৮৬টি আসন পেয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলে স্পষ্ট হয়েছে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যখাতের সংকট এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা ভোটারদের রায়কে প্রভাবিত করেছে।

শনিবার (৩ মে) সিডনির লেবার পার্টির সদর দপ্তরে উল্লাসমুখর পরিবেশে বিজয়ের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ। বলেন, “বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার সময়ে অস্ট্রেলিয়াবাসী প্রত্যাশা ও স্থিতিশীলতাকে বেছে নিয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার ও আস্থার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ গড়ার কাজে ফিরছি।”

অন্যদিকে, পিটার ডাটনের জন্য নির্বাচন ছিল এক হতাশাজনক অধ্যায়। ২৪ বছর ধরে ধরে রাখা নিজের আসন ব্রিসবেনের ডিকসনেও হেরেছেন তিনি। লেবার প্রার্থী আলী ফ্রান্স প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে তাকে হারিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচনের পর ডাটন দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “প্রচারণায় আমরা যথেষ্ট ভালো করতে পারিনি, এর দায় আমি নিচ্ছি।”

বিশ্লেষকদের মতে, ডাটনের পতনের পেছনে তার রাজনৈতিক অবস্থান ও প্রচারের ধরন বড় ভূমিকা রেখেছে। অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা, চীনের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মতাদর্শগত মিল তাকে জনমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। এমনকি তার দলের এক নেত্রী প্রকাশ্যে এমএজিএ টুপি পরে ছবি তোলেন যা অস্ট্রেলীয় রাজনীতিতে অস্বাভাবিক ঘটনা।

ডাটনের প্রতিশ্রুতি ছিল একদিকে সরকারি ব্যয় কমানো, আবার অন্যদিকে কর ছাড় ও স্বাস্থ্যখাতে বিপুল অর্থ ব্যয়ের ঘোষণা এই দ্বৈত বার্তা ভোটারদের বিভ্রান্ত করে। ট্রাম্পের মতোই তার অর্থনৈতিক নীতিও পরস্পরবিরোধী ছিল, যা বাজারে উদ্বেগ তৈরি করে।

ফলে এই নির্বাচন অনেকের কাছে অস্ট্রেলিয়ায় ট্রাম্পীয় রাজনীতির অবসান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যেখানে বিভাজনের বদলে স্থিতিশীলতাই জয় পেয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে ট্রাম্পীয় রাজনীতির পরাজয়, দ্বিতীয় মেয়াদে বিজয়ী আলবানিজ

আপডেট সময় ১১:১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

 

অস্ট্রেলিয়ার সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে শুধু বিরোধী নেতা পিটার ডাটনের পরাজয় নয় হার হয়েছে এক ধরনের রাজনীতিরও। দেশটির গণমাধ্যম বলছে, ডাটন প্রচারণায় ছিলেন ট্রাম্পীয় কট্টর রক্ষণশীল বার্তা ও বিভাজনমূলক অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু অস্ট্রেলীয় ভোটাররা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন এ ধরনের রাজনীতি এখানে চলবে না।

অ্যান্থনি আলবানিজ দ্বিতীয় মেয়াদে পরপর জয় পেয়ে ইতিহাস গড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০ আসনের মধ্যে লেবার পার্টি অন্তত ৮৬টি আসন পেয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলে স্পষ্ট হয়েছে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যখাতের সংকট এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা ভোটারদের রায়কে প্রভাবিত করেছে।

শনিবার (৩ মে) সিডনির লেবার পার্টির সদর দপ্তরে উল্লাসমুখর পরিবেশে বিজয়ের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ। বলেন, “বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার সময়ে অস্ট্রেলিয়াবাসী প্রত্যাশা ও স্থিতিশীলতাকে বেছে নিয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার ও আস্থার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ গড়ার কাজে ফিরছি।”

অন্যদিকে, পিটার ডাটনের জন্য নির্বাচন ছিল এক হতাশাজনক অধ্যায়। ২৪ বছর ধরে ধরে রাখা নিজের আসন ব্রিসবেনের ডিকসনেও হেরেছেন তিনি। লেবার প্রার্থী আলী ফ্রান্স প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে তাকে হারিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচনের পর ডাটন দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “প্রচারণায় আমরা যথেষ্ট ভালো করতে পারিনি, এর দায় আমি নিচ্ছি।”

বিশ্লেষকদের মতে, ডাটনের পতনের পেছনে তার রাজনৈতিক অবস্থান ও প্রচারের ধরন বড় ভূমিকা রেখেছে। অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা, চীনের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মতাদর্শগত মিল তাকে জনমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। এমনকি তার দলের এক নেত্রী প্রকাশ্যে এমএজিএ টুপি পরে ছবি তোলেন যা অস্ট্রেলীয় রাজনীতিতে অস্বাভাবিক ঘটনা।

ডাটনের প্রতিশ্রুতি ছিল একদিকে সরকারি ব্যয় কমানো, আবার অন্যদিকে কর ছাড় ও স্বাস্থ্যখাতে বিপুল অর্থ ব্যয়ের ঘোষণা এই দ্বৈত বার্তা ভোটারদের বিভ্রান্ত করে। ট্রাম্পের মতোই তার অর্থনৈতিক নীতিও পরস্পরবিরোধী ছিল, যা বাজারে উদ্বেগ তৈরি করে।

ফলে এই নির্বাচন অনেকের কাছে অস্ট্রেলিয়ায় ট্রাম্পীয় রাজনীতির অবসান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যেখানে বিভাজনের বদলে স্থিতিশীলতাই জয় পেয়েছে।