বাশার আল-আসাদকে উদ্ধারে ইরানের বিমান থামিয়েছে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

- আপডেট সময় ১২:০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
- / 34
সিরিয়ার পরিস্থিতি তখন চরম টালমাটাল। রাজধানী দামেস্কে যেকোনো সময় বিদ্রোহী যোদ্ধারা ঢুকে পড়বে এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উদ্ধারের জন্য উড়োজাহাজ পাঠিয়েছিল ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান। তবে মাঝ আকাশেই বাধা দেয় ইসরায়েল। ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান ইরানি উড়োজাহাজগুলোকে থামিয়ে দেয়। ফলে আসাদকে উদ্ধার করার ইরানি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। সম্প্রতি এমন তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু জানান, “ইরান বাশার আল-আসাদকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে চেয়েছিল। সে উদ্দেশ্যে তারা দামেস্কে উড়োজাহাজ পাঠিয়েছিল। কিন্তু আমরা তা রুখে দিই।” তিনি বলেন, ইসরায়েল তখন ইরানি উড়োজাহাজগুলোকে ঠেকাতে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠায় এবং সেগুলো ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
তবে এ বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। নেতানিয়াহুও আর বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ভোরে বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কে প্রবেশ করে। পতন ঘটে বাশার আল-আসাদ সরকারের। এরপর তিনি রাশিয়ার একটি বিশেষ উড়োজাহাজে করে মস্কো পালিয়ে যান। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে চলা আল-আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান ঘটে।
পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, দামেস্ক ছেড়ে প্রথমে সিরিয়ার উপকূলীয় শহর লাতাকিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে যান বাশার আল-আসাদ। সেখান থেকে রাশিয়ার একটি উড়োজাহাজে তিনি মস্কো পৌঁছান। তখন থেকেই তাঁর স্ত্রী আসমা আল-আসাদ এবং তাঁদের তিন সন্তান মস্কোতেই অবস্থান করছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সাল থেকে সিরিয়ায় শাসন শুরু করে আল-আসাদ পরিবার। প্রথমে হাফিজ আল-আসাদ ছিলেন প্রেসিডেন্ট, যিনি ২০০০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তাঁর পুত্র বাশার আল-আসাদ মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ক্ষমতায় আসেন এবং টানা ২৪ বছর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাশার আল-আসাদের শাসনের শেষ ১৩ বছর ছিল গৃহযুদ্ধ ও সংঘাতে ভরা। এই সময়ে সিরিয়ায় প্রাণ হারান পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ। দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ গৃহহীন ও উদ্বাস্তু হয়ে পড়েন। সৃষ্টি হয় ইতিহাসের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট।