ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বাজেট কাটছাঁট: ৫০% কমছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বরাদ্দ

- আপডেট সময় ১১:৫২:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
- / 12
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক কূটনীতির বাজেট নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রস্তাবিত ছাঁটাই অনুযায়ী, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাজেট অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বিষয়টি নিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে রয়টার্স, বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বাজেট কাটছাঁটের আওতায় পড়ছে শুধু পররাষ্ট্র দপ্তরই নয়, বরং জাতিসংঘ, ন্যাটো, এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিগুলো। ফুলব্রাইট প্রোগ্রামের মতো বহু প্রতীক্ষিত ও সম্মানজনক বৃত্তির ভবিষ্যতও ঝুঁকির মুখে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাজেট ২০২৬ অর্থবছরে ২৮.৪ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে চলতি বছরে তা ছিল ৫৪.৪ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর মাধ্যমে বিতরণ করা বৈদেশিক সহায়তা ৩৮.৩ বিলিয়ন থেকে ১৬.৯ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইতিমধ্যে ফেব্রুয়ারিতে ইউএসএআইডি’র পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে কর্মহীন হয়েছেন হাজার হাজার কর্মী। ফুলব্রাইটসহ সকল শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম বাদ দেওয়ার বিষয়েও সুপারিশ রয়েছে।
রয়টার্সের হাতে আসা আরেকটি নথি অনুযায়ী, অন্তত ১০টি মার্কিন দূতাবাস বন্ধের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ইরিত্রিয়া, মালদ্বীপ, লেসোথো, গাম্বিয়া, লুক্সেমবার্গ ও দক্ষিণ সুদান। এছাড়া ফ্রান্স ও জার্মানিতে বেশ কয়েকটি কনস্যুলেট বন্ধের সুপারিশও রয়েছে।
কানাডার মন্ট্রিয়াল ও হ্যালিফ্যাক্সের কনস্যুলেট সীমিত আকারে পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি, ইউনিসেফ ও ওআইসিডি’র মতো সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব সংশ্লিষ্ট শহরের দূতাবাসে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
মার্কিন ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এই পদক্ষেপকে ‘বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইকেল ম্যাকফল বলেন, “এটি চীনের জন্য এক বিশাল উপহার।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন একটি সময় যখন বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় কূটনৈতিক জোটবদ্ধতা প্রয়োজন, ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে দুর্বল করতে পারে।