নেতানিয়াহু ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি: সাবেক সেনাপ্রধান
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে শুধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই নয়, ইসরাইলের ভেতরেও ক্ষোভ দিন দিন তীব্র হচ্ছে। গাজার মানবিক বিপর্যয় ও যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশটির বহু সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তা।
এই প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের সাবেক সেনাপ্রধান ড্যান হালুৎজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) চ্যানেল ১২-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আসলে ইসরাইলের শত্রু। তিনি আমাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।”
তিনি বলেন, “শত্রুদের দমন করা উচিত, তাদের আটক করা যায়, তবে কাউকে হত্যা করাকে আমি সমর্থন করি না।”
ড্যান হালুৎজের এই মন্তব্য ইসরাইলি রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টি এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা এক বিবৃতিতে জানায়, “এটি একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন উসকানি। এটি চরম বামপন্থিদের নেতানিয়াহুকে হত্যার জন্য উৎসাহিত করতে পারে।”
লিকুদ আরও জানায়, “আইডিএফের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ প্রধান হিসেবে পরিচিত ড্যান হালুৎজের এ ধরনের বক্তব্য মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার।”
এই প্রতিক্রিয়াগুলোর পেছনে রয়েছে গাজার চলমান মানবিক বিপর্যয়। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারো গাজায় ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এই পরিস্থিতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাজারো সাবেক ও বর্তমান সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ ও গাজা থেকে ইসরাইলি জিম্মিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
ড্যান হালুৎজের বিস্ফোরক মন্তব্য এই আহ্বানকেই আরও জোরালো করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ইসরাইলের ভেতর থেকেই যখন এমন কড়া সমালোচনা উঠে আসে, তখন বোঝা যায় নেতানিয়াহুর নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ কতটা গভীরে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ক্ষোভ ভবিষ্যতে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।