গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘গাজায় ত্রাণ ফুরিয়ে গেছে, মৃত্যু আর দুর্ভিক্ষ এখন নিত্যদিনের বাস্তবতা।’
ইসরায়েল আবারও গাজার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, বন্ধ করেছে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রীর প্রবেশ। এরইমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে চালানো বিমান ও স্থল অভিযানে গত ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৪৪৯ ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, চলমান অভিযানে মোট প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার ৮১০।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “গাজা এখন এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। বেসামরিক মানুষ এক চিরন্তন মৃত্যুফাঁদে আটকা পড়েছেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, দখলদার শক্তির উচিত তাদের কাছে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু সেই পথ এখন বন্ধ।” তিনি এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেন।
এর আগে জাতিসংঘের ছয়টি সংস্থা ওসিএইচএ, ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, ডব্লিউএইচও, ইউএনআরডব্লিউএ ও ইউএনওপিএস এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, গাজার প্রায় ছয় লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের এক ধাপ দূরে অবস্থান করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গাজার মানুষ আবার বোমা ও ক্ষুধার ফাঁদে আটকা পড়েছে। তাদের খাওয়ানোর মতো যথেষ্ট খাদ্য নেই, অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ প্রায় শেষ।’
তবে ইসরায়েল জাতিসংঘের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরিন মারমোরস্টেইন বলেন, ‘গাজায় কোনো খাদ্যসংকট নেই। যুদ্ধবিরতির সময় ২৫ হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে।’ তিনি গুতেরেসের বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন কুৎসা’ বলেও অভিহিত করেন।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। গত ২ মার্চ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই নতুন করে গাজায় অবরোধ ও হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।
বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, অবিলম্বে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত না করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।