গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে আবারও রক্তাক্ত অভিযান চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতভর চলা এই অভিযানে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশু রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, রাতভর একাধিক স্থানে চালানো বোমা হামলায় গোটা উপত্যকা কেঁপে ওঠে। বিশেষ করে গাজার উত্তরের শহর বেইত লাহিয়া ও গাজা সিটিতে হামলার তীব্রতা ছিল বেশি। বেইত লাহিয়ায় ছয়জন এবং গাজা সিটিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাসাল বলেন, “হামলাগুলো ছিল পূর্ব পরিকল্পিত ও টার্গেট নির্ভর। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশু রয়েছে, যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।”
এদিকে একই রাতে পশ্চিম তীরেও অভিযান অব্যাহত রাখে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, বিভিন্ন এলাকায় বাসভবনে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার ও উচ্ছেদ করা হয়েছে।
ফিলিস্তিন মিডিয়া সেন্টারের তথ্যমতে, নাবলুসের পূর্বাঞ্চলের রুজেইব গ্রামে একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে ইসরাইলি সেনারা। পরে সেখানকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়। অভিযানকালে সেনারা ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, রামাল্লার কাছাকাছি নি’লিন শহরে অভিযান চালিয়ে কাঁদানে গ্যাস ও তাজা গুলি ছোড়ে ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় ১৮ ও ১৪ বছর বয়সী দুই ভাইকে গ্রেফতার করা হয়।
গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলের এই লাগাতার আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। শিশুদের মৃত্যু ও বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করছে তারা।
অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। একদিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা, অন্যদিকে পশ্চিম তীরেও বাড়ছে দখলদার বাহিনীর দমন অভিযান। শান্তির আশায় দিন গুনছে ফিলিস্তিনিরা।