অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত

- আপডেট সময় ১১:৪৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
- / 20
গাজার আকাশে আবারও আগুনের লেলিহান শিখা। দখলদার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর টানা বোমাবর্ষণে একের পর এক প্রাণ ঝরছে। সোমবার ভোর থেকে শুরু হওয়া সর্বশেষ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৬০ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন শতাধিক। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৭৫২ জনে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই মর্মান্তিক চিত্র।
গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহর একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একই পরিবারের ৯ জন নিহত হন। অপরদিকে, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের পাশে এক শরণার্থী তাঁবুতে চালানো হামলায় প্রাণ হারান আরও তিনজন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা যায়, গেল ২৪ ঘণ্টায় আহত ১৩৭ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৭৫ জনে। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন; জীবিত না মৃত, জানা নেই কারও। উদ্ধারকর্মীদের কাছেও পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না নিরবিচ্ছিন্ন গোলাবর্ষণের কারণে।
গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভেঙে ফের নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এরপর থেকে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১,৪০০ ফিলিস্তিনি এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৪ লাখেরও বেশি মানুষ।
এর আগে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল। প্রায় দু’মাস শান্তিপূর্ণ সময় পার হলেও, হামাসের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে নতুন করে আগ্রাসন শুরু করে তারা।
গাজার পরিস্থিতি এখন মানবিক বিপর্যয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। খাদ্য, ওষুধ, পানি সবকিছুর অভাব প্রকট। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বারবার আহ্বান জানানো হলেও এখনো মেলেনি কার্যকর সমাধান।
বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জোরালো হলেও, গাজাবাসীর রক্তাক্ত প্রতিদিন যেন থামছেই না। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই নিধনযজ্ঞ বন্ধ না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক ভয়াবহ অধ্যায় রচিত হচ্ছে গাজার বালুকণায়।