ঢাকা ১১:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ইরানের কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত, নিখোঁজ বহু বন্দি গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৭২, ত্রাণ কেন্দ্রেও হামলা যুক্তরাষ্ট্রের পাহাড়ি অঞ্চলে স্নাইপার হামলা, নিহত ২ ফায়ার সার্ভিস কর্মী হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৬০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি হাজি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত ওপেক প্লাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বিশ্ববাজারে তেলের বাজারে দামে পতন মেসির ইন্টার মায়ামিকে উড়িয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে পিএসজি মগবাজারের হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু ফরিদপুরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হোতা কুটি মিয়া অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার

সর্দি কাশি দূর করার ১১টি ঘরোয়া উপায়

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩১:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • / 12

ছবি সংগৃহীত

 

শীতে কিংবা মৌসুমী পরিবর্তনে আমাদের মধ্যে অনেকেই সর্দি ও কাশির সমস্যায় ভুগে থাকি। এটি একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর সমস্যা। আমাদের দেহে কিছু প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে সর্দি ও কাশি দেখা দেয়, যা আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করে। গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শীত যে কোনো মৌসুমেই সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দেয়। সর্দি ও কাশি সাধারণত মৌসুম পরিবর্তনের সময় বেশি হয়। এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা সাধারণত ভাইরাস বা ঠান্ডাজনিত কারণে হয়। সর্দি ও কাশি যখনই হয়, আমরা চিকিৎসকের কাছে যেতে চাই। তবে ঘরোয়া উপায়েও সর্দি ও কাশি উপশম করা যায়। এখানে কিছু কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো যা সর্দি-কাশি উপশম করতে পারে।

১. আদা-চা

আদা প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে এবং ঠান্ডা ও কাশির জন্য খুবই উপকারী। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এক কাপ গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। চাইলে একটু মধু ও লেবু যোগ করতে পারেন। প্রতিদিন ২-৩ বার এই চা পান করলে সর্দি-কাশি অনেকটা উপশম হবে।

২. তুলসী পাতার রস

তুলসী পাতাকে হিন্দুধর্মে পবিত্র মনে করা হয় এবং এর ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে। তুলসী পাতা সর্দি-কাশি উপশমে অত্যন্ত কার্যকর। কয়েকটি তাজা তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া বা তুলসী পাতা সেদ্ধ করে তার রস পান করলে শ্বাসনালীতে জমে থাকা শ্লেষ্মা পরিষ্কার হয়।

৩. মধু ও লেবুর মিশ্রণ

মধু এবং লেবুর মিশ্রণ সর্দি-কাশি উপশমে অত্যন্ত জনপ্রিয়। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে এবং লেবুতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ১ চামচ মধুর সাথে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে সর্দি-কাশি দ্রুত উপশম হয়।

৪. লবঙ্গ ও মধুর পেস্ট

লবঙ্গ প্রাকৃতিক ভাবে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি কাশি কমাতে সহায়ক। ২-৩টি লবঙ্গ গুঁড়ো করে তার সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খান। দিনে ২ বার এই মিশ্রণটি গ্রহণ করলে সর্দি ও কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৫. গরম পানির ভাপ

গরম পানির ভাপ নেয়া সর্দি-কাশি দূর করার একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি। একটি বড় পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার উপর মাথা ঢেকে ভাপ নিন। এর সাথে কিছু ইউক্যালিপটাস তেল যোগ করতে পারেন, যা শ্বাসনালীর সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে। এই পদ্ধতি শ্বাসনালীর শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে এবং সর্দি কমাতে সহায়ক।

৬. মেথি বীজের পানি

মেথি বীজের মধ্যে অনেক প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চামচ মেথি বীজ সেদ্ধ করে তার পানি পান করলে সর্দি ও কাশি উপশম হয়। এটি গলা ব্যথা ও গলার শুষ্কতা দূর করতেও কার্যকর।

৭. লবণ পানি দিয়ে গার্গল

লবণ পানি দিয়ে গার্গল করলে গলার ব্যথা এবং শ্লেষ্মা জমে যাওয়া সমস্যা দূর হয়। এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে প্রতিদিন ৩-৪ বার গার্গল করুন। এটি গলার ব্যথা উপশমে অত্যন্ত কার্যকর।

৮. হলুদ দুধ

হলুদে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান থাকে যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি হিসাবে কাজ করে। সর্দি-কাশি দূর করতে এক গ্লাস গরম দুধে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে পান করতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে এই মিশ্রণটি পান করলে কাশি কমে যায় এবং ঘুম ভালো হয়।

৯. এলাচি চা

এলাচি শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। এক কাপ গরম পানিতে ২-৩টি এলাচি সেদ্ধ করে চা তৈরি করুন। এই চা সর্দি-কাশি কমাতে কার্যকর এবং গলা শান্ত করতে সহায়ক।

১০. গরম স্যুপ

ঠান্ডা লেগে গেলে গরম স্যুপ শরীরকে গরম রাখে এবং শ্বাসনালীর সমস্যাগুলো দূর করে। চিকেন বা সবজির স্যুপ তৈরি করে দিনে ২-৩ বার পান করতে পারেন। এতে শ্লেষ্মা জমে থাকা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১১. বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত পানি পান

সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরকে বিশ্রাম দিলে এটি নিজেই রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। এছাড়া প্রচুর পানি পান করলে শরীরের ভিতরের টক্সিন বের হয়ে যায়, যা দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

সর্দি কাশি একটি সাধারণ অসুখ হলেও এটি যদি উপেক্ষা করা হয়, তবে সমস্যা বাড়তে পারে। তাই সর্দি কাশি হলে করনীয় ঘরোয়া চিকিৎসা অবলম্বন করা উচিত। এই চিকিৎসাগুলি কার্যকর হলেও, যদি লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা জটিলতা বাড়ে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সর্দি কাশি গলা ব্যথা, সর্দি কাশি দূর করার উপায়, সর্দি কাশি হলে কি করনীয় এবং ঠান্ডা কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানলে আপনি সহজেই এই সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

সর্দি কাশি দূর করার ১১টি ঘরোয়া উপায়

আপডেট সময় ০৪:৩১:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

 

শীতে কিংবা মৌসুমী পরিবর্তনে আমাদের মধ্যে অনেকেই সর্দি ও কাশির সমস্যায় ভুগে থাকি। এটি একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর সমস্যা। আমাদের দেহে কিছু প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে সর্দি ও কাশি দেখা দেয়, যা আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করে। গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শীত যে কোনো মৌসুমেই সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দেয়। সর্দি ও কাশি সাধারণত মৌসুম পরিবর্তনের সময় বেশি হয়। এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা সাধারণত ভাইরাস বা ঠান্ডাজনিত কারণে হয়। সর্দি ও কাশি যখনই হয়, আমরা চিকিৎসকের কাছে যেতে চাই। তবে ঘরোয়া উপায়েও সর্দি ও কাশি উপশম করা যায়। এখানে কিছু কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো যা সর্দি-কাশি উপশম করতে পারে।

১. আদা-চা

আদা প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে এবং ঠান্ডা ও কাশির জন্য খুবই উপকারী। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এক কাপ গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। চাইলে একটু মধু ও লেবু যোগ করতে পারেন। প্রতিদিন ২-৩ বার এই চা পান করলে সর্দি-কাশি অনেকটা উপশম হবে।

২. তুলসী পাতার রস

তুলসী পাতাকে হিন্দুধর্মে পবিত্র মনে করা হয় এবং এর ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে। তুলসী পাতা সর্দি-কাশি উপশমে অত্যন্ত কার্যকর। কয়েকটি তাজা তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া বা তুলসী পাতা সেদ্ধ করে তার রস পান করলে শ্বাসনালীতে জমে থাকা শ্লেষ্মা পরিষ্কার হয়।

৩. মধু ও লেবুর মিশ্রণ

মধু এবং লেবুর মিশ্রণ সর্দি-কাশি উপশমে অত্যন্ত জনপ্রিয়। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে এবং লেবুতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ১ চামচ মধুর সাথে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে সর্দি-কাশি দ্রুত উপশম হয়।

৪. লবঙ্গ ও মধুর পেস্ট

লবঙ্গ প্রাকৃতিক ভাবে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি কাশি কমাতে সহায়ক। ২-৩টি লবঙ্গ গুঁড়ো করে তার সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খান। দিনে ২ বার এই মিশ্রণটি গ্রহণ করলে সর্দি ও কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৫. গরম পানির ভাপ

গরম পানির ভাপ নেয়া সর্দি-কাশি দূর করার একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি। একটি বড় পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার উপর মাথা ঢেকে ভাপ নিন। এর সাথে কিছু ইউক্যালিপটাস তেল যোগ করতে পারেন, যা শ্বাসনালীর সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে। এই পদ্ধতি শ্বাসনালীর শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে এবং সর্দি কমাতে সহায়ক।

৬. মেথি বীজের পানি

মেথি বীজের মধ্যে অনেক প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চামচ মেথি বীজ সেদ্ধ করে তার পানি পান করলে সর্দি ও কাশি উপশম হয়। এটি গলা ব্যথা ও গলার শুষ্কতা দূর করতেও কার্যকর।

৭. লবণ পানি দিয়ে গার্গল

লবণ পানি দিয়ে গার্গল করলে গলার ব্যথা এবং শ্লেষ্মা জমে যাওয়া সমস্যা দূর হয়। এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে প্রতিদিন ৩-৪ বার গার্গল করুন। এটি গলার ব্যথা উপশমে অত্যন্ত কার্যকর।

৮. হলুদ দুধ

হলুদে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান থাকে যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি হিসাবে কাজ করে। সর্দি-কাশি দূর করতে এক গ্লাস গরম দুধে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে পান করতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে এই মিশ্রণটি পান করলে কাশি কমে যায় এবং ঘুম ভালো হয়।

৯. এলাচি চা

এলাচি শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। এক কাপ গরম পানিতে ২-৩টি এলাচি সেদ্ধ করে চা তৈরি করুন। এই চা সর্দি-কাশি কমাতে কার্যকর এবং গলা শান্ত করতে সহায়ক।

১০. গরম স্যুপ

ঠান্ডা লেগে গেলে গরম স্যুপ শরীরকে গরম রাখে এবং শ্বাসনালীর সমস্যাগুলো দূর করে। চিকেন বা সবজির স্যুপ তৈরি করে দিনে ২-৩ বার পান করতে পারেন। এতে শ্লেষ্মা জমে থাকা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১১. বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত পানি পান

সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরকে বিশ্রাম দিলে এটি নিজেই রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। এছাড়া প্রচুর পানি পান করলে শরীরের ভিতরের টক্সিন বের হয়ে যায়, যা দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

সর্দি কাশি একটি সাধারণ অসুখ হলেও এটি যদি উপেক্ষা করা হয়, তবে সমস্যা বাড়তে পারে। তাই সর্দি কাশি হলে করনীয় ঘরোয়া চিকিৎসা অবলম্বন করা উচিত। এই চিকিৎসাগুলি কার্যকর হলেও, যদি লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা জটিলতা বাড়ে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সর্দি কাশি গলা ব্যথা, সর্দি কাশি দূর করার উপায়, সর্দি কাশি হলে কি করনীয় এবং ঠান্ডা কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানলে আপনি সহজেই এই সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবেন।