ইসরায়েলে আটক হওয়ার পর দেশে ফিরলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম

- আপডেট সময় ০৯:৩২:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / 36
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা অভিযানে অংশ নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর অবশেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে শহিদুল আলমকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তার পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা। ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে বেরিয়ে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এবং গাজা অভিমুখী তার যাত্রার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
শহিদুল আলম বলেন, “গাজার মানুষ এখনো কষ্টে আছে, এখনো তারা নির্যাতনের শিকার। যতক্ষণ পর্যন্ত সেই নির্যাতন বন্ধ না হবে, আমাদের কাজও শেষ হবে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের যেসব মানুষ আমার মুক্তির জন্য উদ্বিগ্ন ছিলেন, দোয়া করেছেন, ভালোবাসা পাঠিয়েছেন—তাদের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।”
এর আগে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান শহিদুল আলম। সেখানে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে তিনি তুর্কিশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
বাংলাদেশের তুরস্কস্থ রাষ্ট্রদূত মো. আমানুর রহমান নিশ্চিত করেন যে, শহিদুল আলমের ফেরার যাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শহিদুল আলমের মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সহযোগিতা করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙা এবং ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসনের প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন-এর নৌযাত্রায় যোগ দেন। এই অভিযানে যুক্ত ছিল আরও একটি মানবিক উদ্যোগ, থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা—যার মোট নয়টি নৌযানে ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা।
গত বুধবার ইসরায়েলি নৌবাহিনী ওই বহরে হামলা চালিয়ে নৌযানের সব যাত্রী ও ক্রুকে আটক করে। তাদের মধ্যেই ছিলেন শহিদুল আলম। তার আটক হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়। জর্ডান, মিশর ও তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অবশেষে কয়েক দিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলেই দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের এই বিশিষ্ট আলোকচিত্রী।