“১০ লাখ টাকার বেশি আমানত ও সঞ্চয়পত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক”

- আপডেট সময় ০৬:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
- / 4
বাংলাদেশ সরকার নতুন একটি নির্দেশনা জারি করে আয়কর রিটার্ন দাখিলকে বাধ্যতামূলক করেছে। এই নির্দেশনার আওতায় ব্যাংক ঋণ, আমানত ও সঞ্চয়পত্রসহ ২৪টি সেবায় আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আরোপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার দিয়ে সব তফসিলি ব্যাংককে জানায় যে, নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের আগে গ্রাহকদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যদি কেউ ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত রাখতে চান বা ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই ব্যাংকে আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ১০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রেও রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
এর আগে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এই বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়। গেজেট অনুযায়ী, এসব আর্থিক লেনদেন ও কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে, না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেবা দিতে বাধ্য থাকবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান ঢাকা পোস্টকে জানান, ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত ও ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে ১০ লাখ টাকার বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে রিটার্ন প্রযোজ্য হবে না।
গেজেটে বলা হয়েছে, যদি কেউ ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের মেয়াদি আমানত খুলতে চান বা তা চালু রাখতে চান, তাহলে তাকে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের আয়কর রিটার্নের প্রমাণ জমা দিতে হবে। একইভাবে, ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রেও এই শর্ত প্রযোজ্য।
এ ছাড়া বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কেনা, কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স বা পেশাজীবী লাইসেন্স নবায়ন, জমি বা ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তিতে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র, ট্রলার ও নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট, এমনকি স্কুলে শিশুর ভর্তি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স গ্রহণের ক্ষেত্রেও রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজন হবে।
আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার করজালের আওতা বাড়ানো, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায়। গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে দেশীয় আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। সরকার আশা করছে, নতুন নিয়মের ফলে অধিক সংখ্যক নাগরিক আয়কর রিটার্ন দাখিলে আগ্রহী হবেন এবং দেশে কর সচেতনতা বাড়বে।