ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান ও তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ জব্দ, ৫৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি দপ্তরে পার্টটাইম চাকরির উদ্যোগ ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শান্তি বজায় থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নোয়াখালীতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যাওয়া এক বিধবাকে গণধর্ষণ লক্ষ্মীপুরে ছেলের হাতে বৃদ্ধ পিতা খুন, ছেলে আটক পাকিস্তান-চীন উদ্যোগে নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের ইঙ্গিত, রয়েছে বাংলাদেশও শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যথাসময়ে শেষ হবে: চিফ প্রসিকিউটর এখন সবাই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন, আন্দোলন যা হওয়ার হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা তুরস্কে ভয়াবহ দাবানলের তাণ্ডব, হুমকির মুখে ঘরবাড়ি-শিল্পাঞ্চল নতুন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় চীন: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলারের নতুন ঋণ অনুমোদন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৫৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • / 18

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা, সরকারি খাতের জবাবদিহিতা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা উন্নয়নে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা) নতুন ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি শনিবার (২১ জুন) তাদের ঢাকা অফিস থেকে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এই ঋণের লক্ষ্য হচ্ছে: সরকারি অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করা, দুর্নীতি কমিয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য টার্গেটেড সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, “সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উন্মুক্ত ও জবাবদিহিতামূলক করতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই অর্থায়ন এসব প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে।”

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা যোগ করেন, “এই অর্থায়ন বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বচ্ছতা ও সুশাসনের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। প্রভাবশালী তথ্যব্যবস্থা ও সঠিক সুবিধাভোগী নির্ধারণের মাধ্যমে দরিদ্র জনগণের কাছে সহায়তা পৌঁছানো সহজ হবে।”

বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণ সহায়তার আওতায় বাংলাদেশ সরকারকে বেশ কিছু শর্ত ও নির্দেশনা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে সব সরকারি প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ, ই-জিপি (ইলেকট্রনিক গভার্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) বাধ্যতামূলক, সুবিধাভোগীর মালিকানা প্রকাশ বাধ্যতামূলক, কর প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংস্কার, সংসদীয় অনুমোদন ব্যতীত করছাড় নয়, দুর্নীতির ঝুঁকি কমাতে নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বৃদ্ধি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) স্বায়ত্তশাসন ও তথ্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, সামাজিক রেজিস্ট্রি উন্নয়ন ও নগদ সহায়তা কর্মসূচি আরও কার্যকর করা।

বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন, যা সরকারকে মানসম্পন্ন নাগরিক সেবা দিতে হিমশিম খাওয়াচ্ছে। এই ঋণ সহায়তা রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো, কর্পোরেট গভর্ন্যান্স জোরদার, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কাঠামো উন্নয়ন ও ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার উপায় বের করা হবে।

বাংলাদেশ সরকারের কাঠামোগত ও আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলারের এই নতুন ঋণ একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। রাজস্ব আহরণ থেকে শুরু করে সরকারি ক্রয়, ব্যাংক খাত ও সামাজিক নিরাপত্তা—সবখাতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন লক্ষ্য করেই এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে মোট ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরে নতুন প্রতিশ্রুতির পরিমাণ দাঁড়াল ৩.০৭ বিলিয়ন ডলারে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলারের নতুন ঋণ অনুমোদন

আপডেট সময় ০৪:৫৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

 

বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা, সরকারি খাতের জবাবদিহিতা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা উন্নয়নে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা) নতুন ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি শনিবার (২১ জুন) তাদের ঢাকা অফিস থেকে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এই ঋণের লক্ষ্য হচ্ছে: সরকারি অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করা, দুর্নীতি কমিয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য টার্গেটেড সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, “সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উন্মুক্ত ও জবাবদিহিতামূলক করতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই অর্থায়ন এসব প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে।”

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা যোগ করেন, “এই অর্থায়ন বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বচ্ছতা ও সুশাসনের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। প্রভাবশালী তথ্যব্যবস্থা ও সঠিক সুবিধাভোগী নির্ধারণের মাধ্যমে দরিদ্র জনগণের কাছে সহায়তা পৌঁছানো সহজ হবে।”

বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণ সহায়তার আওতায় বাংলাদেশ সরকারকে বেশ কিছু শর্ত ও নির্দেশনা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে সব সরকারি প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ, ই-জিপি (ইলেকট্রনিক গভার্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) বাধ্যতামূলক, সুবিধাভোগীর মালিকানা প্রকাশ বাধ্যতামূলক, কর প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংস্কার, সংসদীয় অনুমোদন ব্যতীত করছাড় নয়, দুর্নীতির ঝুঁকি কমাতে নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বৃদ্ধি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) স্বায়ত্তশাসন ও তথ্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, সামাজিক রেজিস্ট্রি উন্নয়ন ও নগদ সহায়তা কর্মসূচি আরও কার্যকর করা।

বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন, যা সরকারকে মানসম্পন্ন নাগরিক সেবা দিতে হিমশিম খাওয়াচ্ছে। এই ঋণ সহায়তা রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো, কর্পোরেট গভর্ন্যান্স জোরদার, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কাঠামো উন্নয়ন ও ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার উপায় বের করা হবে।

বাংলাদেশ সরকারের কাঠামোগত ও আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলারের এই নতুন ঋণ একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। রাজস্ব আহরণ থেকে শুরু করে সরকারি ক্রয়, ব্যাংক খাত ও সামাজিক নিরাপত্তা—সবখাতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন লক্ষ্য করেই এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে মোট ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরে নতুন প্রতিশ্রুতির পরিমাণ দাঁড়াল ৩.০৭ বিলিয়ন ডলারে।