৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও মাছ ধরায় ফিরলেন জেলেরা

- আপডেট সময় ০৪:২৫:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 13
বঙ্গোপসাগরে মাছের বংশবিস্তার ও সংরক্ষণ নিশ্চিতে জারি করা ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সমুদ্রে মাছ ধরায় ফিরেছেন উপকূলীয় জেলা ভোলাসহ আশপাশের অঞ্চলের হাজার হাজার জেলে।
সরকার চলতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন ও সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পূর্বে এই সময়সীমা ছিল ৬৫ দিন, তবে এবার ভারতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তা ৭ দিন কমিয়ে ৫৮ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানিয়েছেন, “ভোলায় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। এরা গত ৫৮ দিন ধরে সমুদ্রে যাওয়া থেকে বিরত ছিলেন।” তিনি আরও জানান, এ সময়ে সরকার তাদের জন্য মাথাপিছু ৭৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছিল যাতে তারা পরিবার নিয়ে এই সময়টি পার করতে পারেন।
নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নিয়মিত টহলে নিয়োজিত ছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স। কঠোর নজরদারির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যাতে কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে না পারে।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় বুধবার সকাল থেকেই উপকূলীয় জেলেপল্লিগুলোতে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। জেলেরা তাদের মাছ ধরার নৌকা, জাল, খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে সমুদ্রযাত্রার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। অনেকেই সকাল থেকে রওনা দেন গভীর সমুদ্রের উদ্দেশে।
২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছ ও চিংড়ির প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ট্রলারে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে। শুরুতে এই সময়টি ছিল ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন। এবার থেকে তা ভারতের সময়ের সঙ্গে মিল রেখে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলেরা আশাবাদী, এ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সমুদ্র থেকে ভালো পরিমাণ মাছ শিকার করে তারা পরিবার ও সমাজের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই ধরনের উদ্যোগ সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি টেকসই মৎস্য আহরণে সহায়ক হবে।