মেঘনায় জাহাজে সাত খুন ‘জড়িত’ ইরফান গ্রেপ্তার
চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাতজন খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে মেঘনা নদীর হরিণা এলাকায় থেমে থাকা একটি জাহাজ থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, নদীপথে ডাকাতদের আকস্মিক হামলার কারণে এই ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হয়। হাইমচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন সুমন বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাস্থলটি চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর তীরে, যেখানে থেমে থাকা জাহাজ থেকে প্রথমে পাঁচজনের মরদেহ এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুইজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ এবং র্যাব অভিযান শুরু করে এবং সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় নিহত সাতজন হলেন—জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল ও মাজেদুল, রানা কাজী এবং লস্কর সবুজ শেখ। তাদের বাড়ি নড়াইল ও ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মামলার বাদী মাহবুব মুর্শেদ তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আহত জুয়েলের গলায় আঘাত থাকায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না এবং ডাকাত দলের বিস্তারিত বিবরণ দিতে সক্ষম হননি। তবে তিনি ইশারা দিয়ে জানিয়েছেন যে, ডাকাত দলকে চিনতে পারবেন যদি সুযোগ আসে। জুয়েল আরও জানিয়েছেন, জাহাজে মোট ৯ জন ছিল এবং ৯ নম্বর ব্যক্তির নাম ইরফান, তবে তার ঠিকানা দিতে পারেননি। ঘটনার পর পুলিশ জাহাজ পরিদর্শন করে উদ্ধার করেছে একটি রক্তমাখা চাইনিজ কুঠার, একটি ফোল্ডিং চাকু, দুটি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, একটি মানিব্যাগ, নগদ ৮ হাজার টাকা, একটি বাংলা খাতা, একটি সিল এবং একটি হেডফোন উদ্ধার করেন।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মহসীন উদ্দিন এবং নৌপুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান নিহতদের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। সেই সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের সদস্যদের ২০ হাজার টাকার চেক এবং নৌপুলিশের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। তবে বাবুর্চি রানা কাজীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত না থাকায় তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি। র্যাব জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি সাত খুনের ঘটনায় জড়িত। মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগে ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।