নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে নতুন আইন আসছে: নারী ও শিশু উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০৬:২৪:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
- / 30
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে নতুন আইন প্রণয়নের চিন্তা করছে সরকার, জানিয়েছেন নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, গত ৯ দিনে দেশে ২৪ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, যা মহামারির মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শারমীন এস মুরশিদ জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেশে নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন চলছে। এর পেছনে রাজনৈতিক অস্থিরতা, মাদক, মোবাইলের অপব্যবহার এবং পর্নোগ্রাফি দায়ী। এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে সরকার নতুন আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে।
তিনি আরও বলেন, ২০ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৪ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে একজন ষাট বছরের বৃদ্ধও একজন শিশুকে ধর্ষণ করেছে, যা সত্যিই অমানবিক। শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “আমি মানবাধিকার কর্মী হলেও এ ধরনের অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে।”
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন মাদরাসায়ও শিশুদের যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। উপদেষ্টা বলেন, “মাদরাসাগুলো অনেক সময় চোখের আড়ালে থাকে, সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। সেখানে বহু শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা দিচ্ছে। অভিভাবকরাও এসব ঘটনা গুরুত্ব দেন না।”
এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি তদারকি করার কথা জানান শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, “স্কুল-মাদরাসায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সরাসরি যাবেন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি জানান, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৪৫টি নির্যাতনের অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে সীমিত সক্ষমতার কারণে সবগুলোর সমাধান সম্ভব নয়। তবুও যেসব অভিযোগ অতি গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো তাৎক্ষণিক সমাধান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই শতাধিক নারীকে কাউন্সেলিং ও আইনি সহায়তার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বছরের পুরো সময়জুড়ে কার্যক্রম চালানোর কথাও জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে অনেক কার্যক্রম এডহক ভিত্তিতে চলে, তবে এখন থেকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারাবছর প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম চালানো হবে।”
এছাড়া যে কোনো ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কুইক রেসপন্স টিম গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশের যেকোনো এলাকায় নারী বা শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেসপন্স টিম পৌঁছে যাবে। শুধু জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে নয়, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়েও কর্মকর্তাদের যেতে হবে।”