ঢাকা ০২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সারাদেশে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ৩৯০ জন জাপান সফরে ছয়টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস সোকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে ১.০৬৩ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে জাপান: রেলপথ উন্নয়নে বড় সহায়তা শর্তসাপেক্ষে পারমাণবিক কর্মসূচির স্থগিতি: ইরানের ঘোষণা বৃষ্টির বাধা মানছে না কোরবানির হাট, জমে উঠেছে পশু কেনাবেচা দেশে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে রেকর্ড গতি, ১০ মাসেই শোধ ৩৫০ কোটি ডলার দক্ষিণের ৭ নদীতে পানি বিপদসীমার ওপরে, তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল গণতন্ত্র পদে পদে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে: খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও তেল আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

বিচার বিভাগের সংস্কার জনগণের দাবি থেকেই শুরু: প্রধান বিচারপতি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৪৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 9

ছবি: সংগৃহীত

 

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের কথা স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “যখন অনাচার-অরাজকতা দাবানলের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, যখন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে বিচার বিভাগ মাত্র কিছু লোকের সেবায় পরিণত হয়েছিল, তখনই সেই শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হয়েছিল।”

বুধবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, “আইনকে অস্ত্র বানিয়ে, বিচার বিভাগকে আপসকামী করে, যে শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল, সেই পতনশীল শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনতার অভ্যুত্থান হয়েছে।”

উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজ থেকে ‘অনারারি ফেলোশিপ’ অর্জনের উপলক্ষে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিজের নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি কোনো দুর্ঘটনাক্রমে নিযুক্ত হইনি। জনগণের নৈতিক দাবি থেকেই আমাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যারা বিচার বিভাগকে সাহস, সত্য ও জবাবদিহিমূলক করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিল।”

তিনি জানান, বিচার বিভাগের সংস্কারের লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ ও অপসারণের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কাউন্সিল ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে কার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় সম্পর্কিত একটি খসড়া আইনও মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য, আজও সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায়বিচার অনেক দূরের বিষয়। তারা বিচার ব্যবস্থাকে এখনো গতিশীল, নিরপেক্ষ এবং নৈতিক বলে মনে করে না। বিলম্বিত বিচার এবং দুর্নীতির মুখোমুখি হতে হয় তাদের প্রতিনিয়ত।”

তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান এবং জানান, সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য দুটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। মামলার অগ্রগতির জন্য ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালুর উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “ন্যায়বিচার কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি শৃঙ্খলা। এই শৃঙ্খলা বিবেক, ত্যাগ ও নমনীয়তার সঙ্গে প্রতিদিন প্রতিফলন ঘটাতে হয়। বিচার বিভাগের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আমরা জনগণের প্রতি কতটা বিশ্বস্ত থেকে সেবা দিতে পারি তার ওপর।”

তিনি আরও জানান, আগামী ২২ জুন বিচার বিভাগের সংস্কার নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকবেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিচার বিভাগের সংস্কার জনগণের দাবি থেকেই শুরু: প্রধান বিচারপতি

আপডেট সময় ১০:৪৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

 

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের কথা স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “যখন অনাচার-অরাজকতা দাবানলের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, যখন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে বিচার বিভাগ মাত্র কিছু লোকের সেবায় পরিণত হয়েছিল, তখনই সেই শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হয়েছিল।”

বুধবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, “আইনকে অস্ত্র বানিয়ে, বিচার বিভাগকে আপসকামী করে, যে শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল, সেই পতনশীল শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনতার অভ্যুত্থান হয়েছে।”

উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজ থেকে ‘অনারারি ফেলোশিপ’ অর্জনের উপলক্ষে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিজের নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি কোনো দুর্ঘটনাক্রমে নিযুক্ত হইনি। জনগণের নৈতিক দাবি থেকেই আমাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যারা বিচার বিভাগকে সাহস, সত্য ও জবাবদিহিমূলক করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিল।”

তিনি জানান, বিচার বিভাগের সংস্কারের লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ ও অপসারণের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কাউন্সিল ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে কার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় সম্পর্কিত একটি খসড়া আইনও মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য, আজও সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায়বিচার অনেক দূরের বিষয়। তারা বিচার ব্যবস্থাকে এখনো গতিশীল, নিরপেক্ষ এবং নৈতিক বলে মনে করে না। বিলম্বিত বিচার এবং দুর্নীতির মুখোমুখি হতে হয় তাদের প্রতিনিয়ত।”

তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান এবং জানান, সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য দুটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। মামলার অগ্রগতির জন্য ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালুর উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “ন্যায়বিচার কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি শৃঙ্খলা। এই শৃঙ্খলা বিবেক, ত্যাগ ও নমনীয়তার সঙ্গে প্রতিদিন প্রতিফলন ঘটাতে হয়। বিচার বিভাগের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আমরা জনগণের প্রতি কতটা বিশ্বস্ত থেকে সেবা দিতে পারি তার ওপর।”

তিনি আরও জানান, আগামী ২২ জুন বিচার বিভাগের সংস্কার নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকবেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।