গছিয়ে দেওয়া ‘উইড হারভেস্টার’ নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

- আপডেট সময় ১২:১০:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
- / 48
প্রায় ছয় কোটি টাকা মূল্যের ভাসমান বর্জ্য পরিষ্কারের যন্ত্র ‘উইড হারভেস্টার’ কার্যকারিতা পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তা নিতে অনিচ্ছুক ছিল। কিন্তু চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি এ যন্ত্রটি জোরপূর্বক গছিয়ে দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এখন এই যন্ত্র কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়েই বিপাকে করপোরেশন।
গত মার্চে রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে যন্ত্রটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সাগরিকার ওয়ার্কশপে জমা দেয়। তখন থেকে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
২০২২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ‘সিটি করপোরেশনের জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ খাত থেকে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে জার্মানি থেকে আটটি উইড হারভেস্টার কেনে। ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনকে একটি করে যন্ত্র দেওয়া হয়।
তবে এই যন্ত্র ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট জলাশয়ে সাত ফুটের বেশি গভীরতা এবং পর্যাপ্ত প্রশস্ততা প্রয়োজন। অথচ চট্টগ্রাম নগরের খালগুলো এতটা গভীর নয়। এমনকি ২০২২ সালের আগস্টে পাহাড়তলীর এক ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুরে যন্ত্রটি পরীক্ষামূলকভাবে নামানো হলেও পরে সেটি আর তুলতে পারেনি করপোরেশন।
সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, এ ধরনের যন্ত্রের জন্য সিটি করপোরেশনের কোনো চাহিদা ছিল না। এটি এখানকার খালগুলোর জন্য উপযোগী নয় এবং বর্তমানে যন্ত্রটি রেখে কী করা হবে, তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না।
এ ধরনের যন্ত্র কাপ্তাই হ্রদ বা মহামায়া হ্রদের মতো বৃহৎ জলাশয়ে ব্যবহারের উপযোগী হতে পারে বলে মত দেন করপোরেশনের এক কর্মকর্তা।
এছাড়া, আগেও এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০২০ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘মন্ত্রীর অভিপ্রায়’ খাত থেকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ইতালি থেকে কেনা ২০টি রোড সুইপার ট্রাক সিটি করপোরেশনগুলোর কার্যকারিতায় ব্যর্থ হয়। চট্টগ্রামে দেওয়া তিনটি ট্রাকও এখন সাগরিকায় পড়ে রয়েছে।
এসব যন্ত্র কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নাকি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে মন্ত্রীর পছন্দের ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাড়তি দামে এসব যন্ত্রপাতি কিনেছে। তবে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, এসব যন্ত্র কেনাকাটায় দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের উচিত এইসব কেনাকাটার তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা।