০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে: সেনাপ্রধান

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / 54

ছবি সংগৃহীত

 

ঢাকা সেনানিবাসে গতকাল এক বিশেষ সভায় সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। দেশের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা দিন দিন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

সেনাপ্রধান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়েছে। কেবল সশস্ত্র বাহিনী এখনো টিকে থেকে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনী সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে, তবুও সেনাবাহিনী ও তাঁকে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে টার্গেট করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি ঘোলা করে তাদের ফায়দা লুটতে চাইছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সেনাপ্রধান জানান, জাতিসংঘ যোগাযোগ করতে চাইলেও বর্তমান সরকার সেই সুযোগ দেয়নি।

মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার নেই বলেও তিনি স্পষ্টভাবে জানান। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, “দেয়ার উইল বি নো করিডর।” তিনি বলেন, এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে কেবলমাত্র একটি নির্বাচিত সরকারই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বর্তমান সরকার জাতিকে প্রক্সি যুদ্ধে ঠেলে দিচ্ছে কি না, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

সেনাপ্রধান বলেন, নয় মাস ধরে তিনি সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও, নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার না থাকায় নিজেকে অভিভাবকহীন মনে করছেন। তিনি রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠনের মাধ্যমে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুলে দিতে হবে।

তিনি ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আসন্ন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বলেন, দীর্ঘদিন শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন থাকায় সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। তাই নির্বাচনের পর দ্রুত সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া জরুরি।

অবশেষে সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জনগণের চোখের অশ্রু যেন না গড়ায়। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সেনাবাহিনীকে দমন করতে পারবে না।”

নিউজটি শেয়ার করুন

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে: সেনাপ্রধান

আপডেট সময় ১০:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

 

ঢাকা সেনানিবাসে গতকাল এক বিশেষ সভায় সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। দেশের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা দিন দিন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

সেনাপ্রধান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়েছে। কেবল সশস্ত্র বাহিনী এখনো টিকে থেকে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করছে। তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনী সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে, তবুও সেনাবাহিনী ও তাঁকে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে টার্গেট করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি ঘোলা করে তাদের ফায়দা লুটতে চাইছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সেনাপ্রধান জানান, জাতিসংঘ যোগাযোগ করতে চাইলেও বর্তমান সরকার সেই সুযোগ দেয়নি।

মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার নেই বলেও তিনি স্পষ্টভাবে জানান। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, “দেয়ার উইল বি নো করিডর।” তিনি বলেন, এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে কেবলমাত্র একটি নির্বাচিত সরকারই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বর্তমান সরকার জাতিকে প্রক্সি যুদ্ধে ঠেলে দিচ্ছে কি না, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

সেনাপ্রধান বলেন, নয় মাস ধরে তিনি সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও, নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার না থাকায় নিজেকে অভিভাবকহীন মনে করছেন। তিনি রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠনের মাধ্যমে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুলে দিতে হবে।

তিনি ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আসন্ন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বলেন, দীর্ঘদিন শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন থাকায় সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। তাই নির্বাচনের পর দ্রুত সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া জরুরি।

অবশেষে সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জনগণের চোখের অশ্রু যেন না গড়ায়। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সেনাবাহিনীকে দমন করতে পারবে না।”