ঢাকা ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
২১ আগস্ট মামলায় খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি শুরু শ্রীমঙ্গলে করলা চাষে বিপ্লব, বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ জীবন গণতন্ত্রের পথে ঐকমত্য প্রয়োজন, মতপার্থক্য নয়: আলী রীয়াজ মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে বসানো নিয়ে উত্তপ্ত গুলিস্তান, চলছেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের হামলার নিন্দা সারজিস আলমের, ‘ধিক্কার জানাই এমন আচরণে’ সিন্ধু চুক্তি ভাঙার চিন্তা করবেন না, নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি পাক প্রধানমন্ত্রীর বাল্যবিবাহ বিরোধী পোস্টের জেরে প্রাণ গেল তরুণের: গ্রেফতার ৬ জন বাজেটে মৎস্য-প্রাণিসম্পদে বাড়তি ভর্তুকি ও ঋণ সুবিধা চান খাতসংশ্লিষ্টরা কুড়িগ্রাম সীমান্তে বজ্রপাতে ১ বিজিবি সদস্য নিহত, আহত আরো ৪ কোটচাঁদপুরে ট্রেনে অভিযান, ৩ কোটির হেরোইন উদ্ধার

কুড়িগ্রামের তিস্তা চরে স্ট্রবেরি চাষে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন, কম লাভে পুঁজি নিয়ে পড়ছে টানাটানি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৩১:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / 28

ছবি সংগৃহীত

 

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তিস্তা নদীর বিস্তীর্ণ বালুচরে স্ট্রবেরি চাষ করে ব্যাপক নজর কাড়েন দুই প্রবাস ফেরত তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক ও হারুনুর রশিদ। তারা প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তিস্তা চরে বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন, একদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অন্যদিকে দেশে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে। কিন্তু সঠিক জাতের চারা না পাওয়ার কারণে তাদের স্বপ্ন এখন ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে।

জানা যায়, বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বালুচরে প্রায় ১২ একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়। গত নভেম্বর মাসে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৬টি জাতের সাড়ে ৩ লাখ স্ট্রবেরি চারা রোপণ করেন তারা। শুরুর দিকে তিস্তা চরে সবুজ গালিচার মতো ফসলের ছবি দেখে স্থানীয়রা মনে করেছিলেন, এটি একটি সফল উদ্যোগ। কিন্তু বর্তমানে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন, কারণ প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার গাছের মধ্যে ফলন দেখা যাচ্ছে না। তাদের লক্ষ্য ছিল প্রতি একর জমিতে ১০ টন ফলন, কিন্তু চারার গুণগত মান খারাপ হওয়ায় তা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না।

উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, “আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই চাষ শুরু করেছিলাম। স্ট্রবেরি বিক্রির জন্য রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও ৫ লাখ টাকার ফলনও অর্জন করা সম্ভব হবে না।”

চরের শ্রমিকরা, যারা মাসিক বেতনভুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, তাদেরও হতাশা একইরকম। আব্দুল মজিদ, আব্দুল হামিদ এবং মিনহাজ আলী বলেন, “যতটা আশা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম, এখন ততটাই বড় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। কৃষি বিভাগের যথাযথ সহায়তার অভাব এবং চারার গুণগত মানের দুর্বলতার কারণে এই বিশাল ক্ষতি হয়েছে।”

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “আমরা অ্যাসেট অ্যাগ্রো প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছি। তবে, সঠিক জাতের চারা নির্বাচন এবং কৃষকদের আরও সচেতন করা প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “কুড়িগ্রামের আবহাওয়া স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযোগী, তবে তাদের সফলতা পাওয়া গেলে পুরো জেলার মধ্যে স্ট্রবেরি চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে।”

এখন প্রশ্ন উঠছে, এই বিপর্যয়ের মধ্যে কীভাবে কৃষকদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করা সম্ভব, এবং স্ট্রবেরি চাষের প্রকৃত সম্ভাবনাকে কীভাবে কাজে লাগানো যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কুড়িগ্রামের তিস্তা চরে স্ট্রবেরি চাষে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন, কম লাভে পুঁজি নিয়ে পড়ছে টানাটানি

আপডেট সময় ০৩:৩১:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

 

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তিস্তা নদীর বিস্তীর্ণ বালুচরে স্ট্রবেরি চাষ করে ব্যাপক নজর কাড়েন দুই প্রবাস ফেরত তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক ও হারুনুর রশিদ। তারা প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তিস্তা চরে বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন, একদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অন্যদিকে দেশে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে। কিন্তু সঠিক জাতের চারা না পাওয়ার কারণে তাদের স্বপ্ন এখন ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে।

জানা যায়, বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বালুচরে প্রায় ১২ একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়। গত নভেম্বর মাসে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৬টি জাতের সাড়ে ৩ লাখ স্ট্রবেরি চারা রোপণ করেন তারা। শুরুর দিকে তিস্তা চরে সবুজ গালিচার মতো ফসলের ছবি দেখে স্থানীয়রা মনে করেছিলেন, এটি একটি সফল উদ্যোগ। কিন্তু বর্তমানে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন, কারণ প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার গাছের মধ্যে ফলন দেখা যাচ্ছে না। তাদের লক্ষ্য ছিল প্রতি একর জমিতে ১০ টন ফলন, কিন্তু চারার গুণগত মান খারাপ হওয়ায় তা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না।

উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, “আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই চাষ শুরু করেছিলাম। স্ট্রবেরি বিক্রির জন্য রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও ৫ লাখ টাকার ফলনও অর্জন করা সম্ভব হবে না।”

চরের শ্রমিকরা, যারা মাসিক বেতনভুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, তাদেরও হতাশা একইরকম। আব্দুল মজিদ, আব্দুল হামিদ এবং মিনহাজ আলী বলেন, “যতটা আশা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম, এখন ততটাই বড় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। কৃষি বিভাগের যথাযথ সহায়তার অভাব এবং চারার গুণগত মানের দুর্বলতার কারণে এই বিশাল ক্ষতি হয়েছে।”

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “আমরা অ্যাসেট অ্যাগ্রো প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছি। তবে, সঠিক জাতের চারা নির্বাচন এবং কৃষকদের আরও সচেতন করা প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “কুড়িগ্রামের আবহাওয়া স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযোগী, তবে তাদের সফলতা পাওয়া গেলে পুরো জেলার মধ্যে স্ট্রবেরি চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে।”

এখন প্রশ্ন উঠছে, এই বিপর্যয়ের মধ্যে কীভাবে কৃষকদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করা সম্ভব, এবং স্ট্রবেরি চাষের প্রকৃত সম্ভাবনাকে কীভাবে কাজে লাগানো যাবে।