রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
এক যুগ পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ছাত্রশিবির, ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ এক যুগ পর প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। কোরআন পোড়ানোর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার দলীয় ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে সংগঠনটি। এই আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর মতে, দীর্ঘদিন গোপনে রাজনীতি করার পর হঠাৎ প্রকাশ্যে আসার পেছনে সুদূরপ্রসারী কোনো কৌশল থাকতে পারে। ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘‘শিবির কি ধর্মীয় কার্যক্রম করছে, নাকি রাজনৈতিকভাবে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে, সেটি পরিষ্কার নয়। তারা যদি সত্যিকার অর্থে রাজনৈতিক মঞ্চে আসতে চায়, তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করুক।’’ একই মত প্রকাশ করেছেন নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোরআন পোড়ানোর ঘটনার যথাযথ তদন্ত না করলে ক্যাম্পাসে বিভাজনের রাজনীতি আরও তীব্র হবে।’’
অন্যদিকে, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার বলেন, ‘‘ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রশিবিরের আত্মপ্রকাশ গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের জন্য উদ্বেগজনক। অতীতে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে তারা নিষ্ক্রিয় ছিল। তাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমই প্রমাণ করবে, তারা গণতন্ত্রের ধারায় ফিরতে চায়, নাকি পূর্বের মতোই ধর্মীয় আদর্শকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন গোপনে বিভিন্ন কার্যক্রম চালালেও সম্প্রতি দলীয় কমিটির কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে শিবির। কোরআন বিতরণ কর্মসূচিতে উপাচার্যের অংশগ্রহণ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করে কেন কোরআন বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিলেন, সেটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’’
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ‘‘ধর্মীয় মূল্যবোধকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার প্রবণতা গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের জন্য হুমকি। অতীতে শিবিরের হাতে ছাত্রনেতারা নিহত হয়েছেন, তাই তাদের প্রকাশ্য রাজনীতি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।’’