ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজায় ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ৭৮ মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি নান্নু গ্রেপ্তার ৫০ দিনের মধ্যে যদি যুদ্ধবিরতির চুক্তি না হলে রাশিয়ার ওপর শতভাগ শুল্ক: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি বিএনপি এখন মুজিববাদের পাহারাদার: অভিযোগ নাহিদ ইসলামের মোসাদ পেন্টাগন অফিস নিয়ন্ত্রণ করতো: সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা লরেন্স উইলকারসনের বিস্ফোরক দাবি জার্মানির F126 ফ্রিগেট প্রকল্পে বিলম্ব, নির্মাণ বন্ধের দাবি CDU’র হানিফ ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুর্নীতির মামলা, সম্পদ বিবরণী চেয়ে আইনি নোটিশ বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় দুই ট্রলারসহ ৩৪ জেলে আটক শুধু বাহক নয়, মাদকের গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরমাণু সংস্থার পরিদর্শকদের জুতার ভেতরে গুপ্তচর চিপ! দাবি ইরানের।

হাওড়ে বোরো ধান কাটার ব্যস্ততা, টানা খরায় উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / 34

ছবি সংগৃহীত

 

মৌলভীবাজারের হাওড় অঞ্চলে এখন চলছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। প্রতিটি মাঠে চলছে কাস্তে ও আধুনিক যন্ত্রের সমন্বয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ততা। বৈশাখের ঝলমলে রোদে সোনালি ধানের মাঠ যেন উৎসবের রঙে ভরে উঠেছে। তবে এ বছর আবহাওয়ার বৈরিতার কারণে উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাওড়পাড়ের কৃষকরা।

জেলার কাওয়াদিঘি, হাকালুকি ও হাইলহাওড় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হাওড়ে এখন পাকা ধানের সমারোহ। শিশু থেকে বৃদ্ধ, গৃহবধূ থেকে শুরু করে সবাই ধান কাটার কাজে হাত লাগিয়েছেন। যান্ত্রিক হারভেস্টারের পাশাপাশি অনেকেই নিজ হাতে ধান কেটে নিচ্ছেন, কারণ শ্রমিক সংকটও রয়েছে প্রকটভাবে।

কৃষকরা জানান, গত বছরের বন্যায় আমন ধানে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এবার বোরো চাষে তারা জোর দিয়েছেন। মনুনদী প্রকল্পভুক্ত কাওয়াদিঘি এলাকায় আগেভাগে সেচের পানির ব্যবস্থা থাকায় অতিরিক্ত জমিতে বোরো চাষ সম্ভব হয়েছে। তবে ফসলে তোড় আসার সময় অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে ধানে ব্যাপক চিটা দেখা দিয়েছে, যা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

কৃষক আনসার মিয়া বলেন, “এ বছর ২০০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। প্রথমে পোকার আক্রমণ হলেও পরে ফলন ভালো হয়। কিন্তু টানা খরার কারণে ধানে চিটা হয়েছে প্রচুর। প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছি।”

কাশেমপুর এলাকার চাষিরাও ধানে চিটার কথা উল্লেখ করে বলেন, পর্যাপ্ত হারভেস্টার মেশিন না থাকায় ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। হাওড় রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব খসরু মিয়া চৌধুরী সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তার দাবি জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সরকার জানান, জেলার হাওড় অঞ্চলের ৯৫ শতাংশ এবং উঁচু এলাকার ৩৪ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, অনাবৃষ্টি ও খরায় চাষিদের ক্ষতি হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা দেয়া হবে।

এ বছর মৌলভীবাজারে ৬২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার সম্ভাব্য উৎপাদন ২ লাখ ৫৫ হাজার ২৩১ মেট্রিক টন। ফলন বাড়াতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

হাওড়ে বোরো ধান কাটার ব্যস্ততা, টানা খরায় উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

আপডেট সময় ০২:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

 

মৌলভীবাজারের হাওড় অঞ্চলে এখন চলছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। প্রতিটি মাঠে চলছে কাস্তে ও আধুনিক যন্ত্রের সমন্বয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ততা। বৈশাখের ঝলমলে রোদে সোনালি ধানের মাঠ যেন উৎসবের রঙে ভরে উঠেছে। তবে এ বছর আবহাওয়ার বৈরিতার কারণে উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাওড়পাড়ের কৃষকরা।

জেলার কাওয়াদিঘি, হাকালুকি ও হাইলহাওড় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হাওড়ে এখন পাকা ধানের সমারোহ। শিশু থেকে বৃদ্ধ, গৃহবধূ থেকে শুরু করে সবাই ধান কাটার কাজে হাত লাগিয়েছেন। যান্ত্রিক হারভেস্টারের পাশাপাশি অনেকেই নিজ হাতে ধান কেটে নিচ্ছেন, কারণ শ্রমিক সংকটও রয়েছে প্রকটভাবে।

কৃষকরা জানান, গত বছরের বন্যায় আমন ধানে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এবার বোরো চাষে তারা জোর দিয়েছেন। মনুনদী প্রকল্পভুক্ত কাওয়াদিঘি এলাকায় আগেভাগে সেচের পানির ব্যবস্থা থাকায় অতিরিক্ত জমিতে বোরো চাষ সম্ভব হয়েছে। তবে ফসলে তোড় আসার সময় অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে ধানে ব্যাপক চিটা দেখা দিয়েছে, যা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

কৃষক আনসার মিয়া বলেন, “এ বছর ২০০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। প্রথমে পোকার আক্রমণ হলেও পরে ফলন ভালো হয়। কিন্তু টানা খরার কারণে ধানে চিটা হয়েছে প্রচুর। প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছি।”

কাশেমপুর এলাকার চাষিরাও ধানে চিটার কথা উল্লেখ করে বলেন, পর্যাপ্ত হারভেস্টার মেশিন না থাকায় ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। হাওড় রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব খসরু মিয়া চৌধুরী সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তার দাবি জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সরকার জানান, জেলার হাওড় অঞ্চলের ৯৫ শতাংশ এবং উঁচু এলাকার ৩৪ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, অনাবৃষ্টি ও খরায় চাষিদের ক্ষতি হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা দেয়া হবে।

এ বছর মৌলভীবাজারে ৬২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার সম্ভাব্য উৎপাদন ২ লাখ ৫৫ হাজার ২৩১ মেট্রিক টন। ফলন বাড়াতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।