রংপুরে একযুগ পর শিবির নেতা আশিকুর রহমান হত্যার বিচার চেয়ে আ. লীগের দুই সাবেক এমপির নামে মামলা
রংপুরের মিঠাপুকুরে এক যুগ (১২ বছর) পর জামায়াতের শিবির নেতা আশিকুর রহমান হত্যার বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা আফতাব উদ্দিন। গত ৮ মার্চ মিঠাপুকুর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার আসামির তালিকায় আওয়ামী লীগের ২২৪ জন নেতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, পাশাপাশি আরও অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৭০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক নিশ্চিত করেছেন যে, মামলার তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। নিহত আশিকুর রহমানের পিতা আফতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১২ বছর পর এই মামলা দায়ের করা হচ্ছে, যেহেতু তখন সঠিক বিচার পাওয়ার পথে বাধা ছিল এবং আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে থানায় মামলা নেওয়া হয়নি।
এদিকে, মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদির বিরুদ্ধে ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে হরতাল ডাকে বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী। মিঠাপুকুর জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিলে, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ওই হামলায় আশিকুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়াও, অন্তত ৫০-৬০ জন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী আহত হন।
মামলায় বাদী আফতাব উদ্দিন উল্লেখ করেছেন যে, তার পুত্রের হত্যার শোকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পাশাপাশি, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে মামলাটি নথিভুক্ত করতে থানায় অসুবিধা হয়, যার ফলে এতদিন পর মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়েছে।
আফতাব উদ্দিন অভিযুক্ত হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, তার ছেলে রাশেক রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকারসহ ২২৪ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে এবং দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক।
এই হত্যা মামলার পরবর্তী কার্যক্রমকে ঘিরে মিঠাপুকুরে এখনই উত্তেজনা বিরাজ করছে।