নেপালের কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশাল মিছিল, রাজনীতির প্রতি হতাশ জনতা
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং হিন্দুধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ফিরিয়ে আনার দাবিতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে। রবিবার, রাজধানীর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন প্রধান ফটক বন্ধ করে প্রায় ১০ হাজার লোক সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে সংবর্ধনা জানিয়ে এই দাবি উত্থাপন করেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা নানা স্লোগান দিতে থাকে—‘রাজার জন্য রাজপ্রাসাদ খালি করুন’, ‘রাজা ফিরে আসুন, দেশকে রক্ষা করুন’, ‘আমাদের প্রিয় রাজা দীর্ঘজীবী হোন’, ‘আমরা রাজতন্ত্র চাই’। সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ দেশের পশ্চিমাঞ্চল সফর শেষে বিমানবন্দরে ফিরলে, তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে এই মিছিল শুরু হয়। বিমানবন্দর গেট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পা দিয়ে বিমানবন্দরে আসা-যাওয়া করতে বাধ্য হন।
স্থানীয় দাঙ্গা পুলিশ মিছিলকারীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে বাধা দিলেও, কোন ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেনি। তবে এই বিক্ষোভ ছিল দৃশ্যমান, প্রভাবশালী এবং দাবি ছিল স্পষ্ট—রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হোক।
২০০৬ সালে নেপালে ব্যাপক গণবিক্ষোভের পর রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং জ্ঞানেন্দ্র শাহকে তাঁর কর্তৃত্ব থেকে সরে যেতে হয়। এরপর, ২০০৮ সালে সংসদ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার পক্ষে ভোট দেয়। তার পর থেকে জ্ঞানেন্দ্র সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন শুরু করেন।
তবে সম্প্রতি অনেক নেপালি নাগরিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, প্রজাতন্ত্র দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে ব্যর্থ হয়েছে এবং রাষ্ট্রের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তারা বিশ্বাস করেন যে, নেপালের দুর্বল অর্থনীতি এবং ব্যাপক দুর্নীতির জন্য প্রজাতন্ত্র দায়ী। ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার পর, নেপালে ১৩টি সরকার পরিবর্তিত হয়েছে, যা দেশের শাসনব্যবস্থাকে আরও অস্থির করেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবির সঙ্গে আরও অনেকেই একাত্মতা ঘোষণা করেছে। তাদের মতে, দেশের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফেরানোর জন্য একমাত্র উপায় রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা।